আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন ৭১ কোটি টাকার পুনর্বাসন প্রকল্প শুরু করেছে

আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন সম্প্রতি ৭১ কোটি টাকার একটি পুনর্বাসন প্রকল্প শুরু করেছে, যা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা প্রদান করবে। ফাউন্ডেশনটির চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ জানিয়েছেন, এ প্রকল্পের আওতায় ৫ হাজার গৃহহীন পরিবারের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা রয়েছে। এদের নগদ অর্থ এবং টিন প্রদান করা হবে, যাতে তারা নতুন করে বসবাসের সুযোগ পায়​।


আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন ৭১ কোটি টাকার পুনর্বাসন প্রকল্প শুরু করেছে


আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের ৭১ কোটি টাকার পুনর্বাসন প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যা সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য নির্ধারিত। ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ রবিবার বিকেলে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। তিনি জানান, ত্রাণ বিতরণের পর কিছু সময়ের মধ্যে হাজার হাজার আবেদন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে, যা পুনর্বাসন কার্যক্রমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

সোমবার (২১ অক্টোবর) ফেনীর মিজান ময়দানে অনুষ্ঠিত একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, এই পুনর্বাসন কার্যক্রমের আওতায় বন্যার্তদের মাঝে অটোরিকশা বিতরণ করা হয়েছে, যা তাদের অর্থনৈতিক পুনর্বাসনে সহায়তা করবে​।

ফাউন্ডেশনটি বন্যার্তদের জন্য বিভিন্ন ধরনের সহায়তা প্রদান করছে, এবং তাদের লক্ষ্য হল প্রয়োজনীয় সাহায্য সঠিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পৌঁছানো।

শায়খ আহমাদুল্লাহ জানিয়েছেন, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন সারাদেশের দুর্গত এলাকায় ১,৫০০টি ঘর নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে, যা আনুমানিক ৪০ কোটি টাকার খরচে সম্পন্ন হবে। এই গৃহায়ণ প্রকল্পের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সহায়তার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রমও পরিচালনা করা হবে।

তিনি উপকারভোগী নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত উল্লেখ করে বলেন, ফাউন্ডেশনটি সাধারণত তিনটি ধাপে আবেদন যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত উপকারভোগী নির্বাচন করে, যেখানে প্রায় শতভাগ স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করে। ইতোমধ্যে এই নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে এবং তারা প্রান্তিক পর্যায়ে গিয়ে গ্রাম থেকে গ্রামে খোঁজ নিয়ে উপকারভোগী নির্বাচন করেছে, যা কিছুটা সময়সাপেক্ষ।

শায়খ আহমাদুল্লাহ জানিয়েছেন, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমের আওতায় ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুরসহ উত্তরাঞ্চল ও উত্তর পূর্বাঞ্চলের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১০০ জনকে অটোরিকশা প্রদান করা হচ্ছে। এ কার্যক্রমের শুরুতে ফেনীতে ৪০টি অটোরিকশা বিতরণ করা হয়েছে।

এটি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জীবনযাত্রা পুনর্বহাল করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ, যা তাদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। ফাউন্ডেশনটি এ ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে আরও বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা করছে, যা ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নত করতে সহায়তা করবে​।

শায়খ আহমাদুল্লাহ ফেনীতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার বিষয়ে বলেন, ফেনীতে ২২ হাজার বন্যার্ত পরিবারকে ২৫ কেজির চালের একটি করে বস্তা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, বিভিন্ন ধাপে শুকনো খাবার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিতরণ করা হয়েছে।

প্রাথমিক পর্যায়ের ত্রাণ কার্যক্রমে গণহারে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে, যার কারণে সঠিক তথ্য-উপাত্ত রাখা সম্ভব হয়নি। তবে পরবর্তী সময়ে উপকারভোগীদের বিস্তারিত তথ্য ফাউন্ডেশনের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, যা ভবিষ্যতে কার্যক্রমের মান নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।

এ সময় ফেনী আলিয়া কামিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গাজী মীর ইকবাল হোসেন, মাদরাসাতুল হিদায়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আলীসহ স্থানীয় বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ ও স্বেচ্ছাসেবকরা উপস্থিত ছিলেন। তারা ফাউন্ডেশনের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমের সহায়তায় অবদান রাখছেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে সহযোগিতা করছেন।

ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগ বন্যার পর মানুষের জীবনে আশার আলো এনে দিতে সাহায্য করছে, এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গেও সমন্বয় করে চলেছে। এই প্রক্রিয়া আরও সুষ্ঠু ও কার্যকরী করতে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতি এবং সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url