ইসলামের বিধান অনুযায়ী বিয়ে পড়ানোর সুন্নত পদ্ধতি

বিয়ের গুরুত্ব সমাজে অপরিসীম, কারণ এটি শুধু দুইজন মানুষের সম্পর্কের সূচনা নয়, বরং একটি সুস্থ ও পরিশীলিত সমাজ নির্মাণের ভিত্তিও। ইসলামে বিয়ের বিধান একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত, যা নবীজির (সা.) জীবনাদর্শ অনুসারে পালন করা উচিত। বিয়ের মাধ্যমে সংসার জীবনের বিভিন্ন দিকের ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব হয় এবং এর ফলে বরকত ও সুখ আসে।


ইসলামের বিধান অনুযায়ী  বিয়ে পড়ানোর সুন্নত পদ্ধতি


বিয়ের সুবিধাসমূহের মধ্যে রয়েছে:

বিয়ে সমাজে নৈতিক ও সামাজিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার একটি মাধ্যম। এটি সঠিক পরিবার গঠনের মাধ্যমে সামাজিক অস্থিরতা কমায়।একজন সঙ্গীর সঙ্গে থাকা মানসিক সমর্থন ও সুখের অনুভূতি প্রদান করে, যা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামে বিয়েকে একটি বরকতময় জীবনযাপনের মাধ্যম হিসেবে দেখা হয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, "বিয়ে করা আমার সুন্নত।" (বুখারি, মুসলিম)বিয়ের মাধ্যমে দ্বীনের মৌলিক অধিকারগুলি পালন করা হয়, যা ধর্মীয় দায়িত্ব পালন করতে সাহায্য করে।

এছাড়া, সুন্নত অনুসরণের মাধ্যমে বর-কনে ও সংশ্লিষ্ট পরিবারের জন্য বরকত বৃদ্ধি পায়। যাদের বিয়ে ইসলামের বিধান অনুযায়ী করা হয়, তারা অনেক বেশি সওয়াবের অধিকারী হন এবং তাদের জীবনযাপন হয় সুখী ও শান্তিপূর্ণ।

বিয়ের ক্ষেত্রে শরিয়তসম্মত ও সুন্নত পন্থা অবলম্বন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমেই যাঁকে বিয়ের জন্য পছন্দ করা হয়েছে, তাঁর দ্বীনদারি সম্পর্কে প্রাধান্য দিতে হবে। ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহ.) এর উপদেশ অনুসারে, বিয়ের প্রস্তাবের ক্ষেত্রে নারীর সৌন্দর্য সম্পর্কে প্রথমে জিজ্ঞাসা করা উচিত। সৌন্দর্যের প্রশংসা করার পরই তার দ্বীন বা ধর্মীয় বিশ্বাসের দিকে নজর দিতে হবে। যদি ওই নারী দ্বীনে প্রশংসনীয় হন, তাহলে তাঁর সাথে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত; অন্যথায়, দ্বীনের কারণে তাঁকে প্রত্যাখ্যান করা উচিত।

এটি বোঝা যায় যে, ইসলামে বিয়ের ক্ষেত্রে দ্বীনের গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যদি একজন পুরুষ নারীর সৌন্দর্যকে প্রাধান্য দেয় এবং পরে তাঁর দ্বীন সম্পর্কে নতজানু হয়, তবে তা বিয়ের মৌলিক নৈতিকতাকে ক্ষুণ্ন করতে পারে।

এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট যে, বিয়ের ক্ষেত্রে সৌন্দর্য ও দ্বীনের গুরুত্ব বিচার করতে গিয়ে সমন্বয়ের প্রয়োজন। ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে, যদি প্রথমে শুধুমাত্র দ্বীনের বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয় এবং পরে সৌন্দর্য নিয়ে আলোচনা করা হয়, তবে তা সঠিক নয়। কারণ, এই পদ্ধতি সৌন্দর্যের দিকে অধিক মনোযোগ দেওয়ার দিকে ইঙ্গিত করে এবং দ্বীনের গুরুত্বকে অবহেলা করে।

এভাবে যদি কাউকে সৌন্দর্যের ভিত্তিতে প্রত্যাখ্যান করা হয়, তবে সেই প্রত্যাখ্যানটি সৌন্দর্যের কারণে হবে, দ্বীনের কারণে নয়। এটি ইসলামের মূল নৈতিকতাকে দুর্বল করে, যেখানে বিশ্বাস ও চরিত্রকেই বিবাহের মূল ভিত্তি হিসেবে দেখা উচিত।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url