জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি বা কন্ট্রাসেপ্টিভ পিল যারা খাবেন না
জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি বা কন্ট্রাসেপ্টিভ পিল ব্যবহার করা উচিত নয় এমন কিছু পরিস্থিতি ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কারণ রয়েছে।
নিম্নলিখিত ব্যক্তিরা জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করবেন:
গর্ভবতী বা গর্ভধারণের পরিকল্পনা করছেন: জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি গর্ভধারণে বাধা দেয়, তাই গর্ভবতী মহিলাদের এই বড়ি ব্যবহার করা উচিত নয়।
যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে: উচ্চ রক্তচাপের কারণে হৃদরোগ বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়, তাই তাদের জন্য পিল ব্যবহারের পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
ক্যান্সারের ইতিহাস: স্তন ক্যান্সার বা যোনির ক্যান্সারের ইতিহাস থাকলে, জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি ব্যবহার করা নিরাপদ নয়।
মাইগ্রেনের সমস্যা: যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা আছে, বিশেষ করে অরো মাইগ্রেন, তাদের পিল ব্যবহার করা উচিত নয়, কারণ এটি মাথাব্যথার তীব্রতা বাড়াতে পারে।
জিগার বা পিত্তথলির সমস্যা: লিভার ফাংশন বা পিত্তথলির সমস্যা থাকলে জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি গ্রহণ করা বিপজ্জনক হতে পারে।
গুরুতর ধমনী বা রক্তের সমস্যা: রক্তের ক্লটিং সমস্যা থাকলে, যেমন থ্রম্বোসিসের ইতিহাস থাকলে, পিল ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়।
এই বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বা চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা অত্যন্ত জরুরি। এছাড়াও, আপনার অবস্থা অনুযায়ী সঠিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নির্ধারণের জন্য পেশাদার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সাথে আলোচনা করা উচিত।
জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ির ব্যাপারে অনেকের মধ্যে কিছু ভুল ধারণা রয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের গাইনী অ্যান্ড অবস বিভাগের অধ্যাপক ডা. ফাতেমা রহমান জানান, জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি কার্যকর এবং জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। তবে অনেকের মনে ভয় রয়েছে যে এই বড়ি ব্যবহারে গর্ভধারণের ক্ষমতা কমে যাবে বা তারা আর বাচ্চা নিতে পারবেন না।
প্রকৃতপক্ষে, গবেষণাগুলি দেখায় যে জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি ব্যবহার করার পর যখন মহিলারা আবার গর্ভধারণ করতে চান, তখন তাদের প্রজনন ক্ষমতা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির এই ধরনের প্রভাব নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই, কারণ এটি সাময়িকভাবে গর্ভধারণ প্রতিরোধ করে এবং এটি বন্ধ করলে শীঘ্রই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া শুরু হয়।
এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া উচিত, এবং যদি কেউ জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে সন্দিহান হন, তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ।
অনেক মেয়ের মধ্যে জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি নিয়ে বেশ কিছু ভুল ধারণা রয়েছে, যেমন এটি ওজন বাড়াতে পারে বা রক্তপাত হতে পারে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের গাইনী অ্যান্ড অবস বিভাগের অধ্যাপক ডা. ফাতেমা রহমান জানান, যদিও জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ির কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে, কিন্তু সেগুলি সাধারণত হালকা এবং গুরুতর কোনও সমস্যা সৃষ্টি করে না।
জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ির সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, এটি সব বয়সী নারীরা ব্যবহার করতে পারে। তবে, বয়স বেশি হলে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করতে হবে, এবং সেক্ষেত্রে ডাক্তার বা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি ব্যবহারের জন্য কিছু শর্ত রয়েছে, যা নিশ্চিত করতে হবে। সাধারণত, যদি কোনও নারী স্বল্পমেয়াদি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করতে চায়, তাহলে আমরা তাকে জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি ব্যবহারের পরামর্শ দিই। তবে, প্রথমেই কিছু ইতিহাস জানা প্রয়োজন।
নিচের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক বিবেচনা করতে হবে:
গর্ভাবস্থার পরীক্ষা: নিশ্চিত করতে হবে যে, নারীটি গর্ভবতী কি না। গর্ভাবস্থায় জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি গ্রহণ করা স্বাস্থ্যকর নয়।
বুকের দুধ খাওয়ানো: যদি নারীটি বুকের দুধ খাওয়াচ্ছে, তাহলে কিছু বিশেষ ধরনের বড়ি ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়। বিশেষ করে, যারা নিখুঁতভাবে প্রজন্মের জন্য প্রস্তুত নয়, তাদের জন্য অবশ্যই ডাক্তারকে দেখানো উচিত।
স্বাস্থ্যগত অবস্থা: কিছু স্বাস্থ্যগত অবস্থা, যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ধমনী বন্ধ হয়ে যাওয়া, অথবা যেকোনো ধরনের ক্যান্সার থাকলে জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি নেওয়া উচিৎ নয়।