ভিডিও বার্তায় মুখ খুলেছেন ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন
ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন ২১ অক্টোবর দিবাগত রাত ১টা ২১ মিনিটে ফেসবুকে একটি রহস্যময় স্ট্যাটাস দিয়েছেন, যেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন যে তিনি পুলিশের সাথে যাচ্ছেন এবং আদালতে দেখা হবে। তার এই বার্তাটি নিয়ে মানুষের মধ্যে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে, তবে তিনি কোথায় এবং কোন পুলিশের সঙ্গে যাচ্ছেন, তা সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট তথ্য দেননি।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন ফেসবুকে একটি ভিডিও বার্তায় মুখ খুলেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, শুরু থেকেই কোটা সংস্কার আন্দোলন ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে থাকার বিষয়টি তিনি পুরোপুরি বোঝাতে পারেননি বলে দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে এই ভিডিওতে তিনি তার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য দেননি।
সুমন এর আগেও বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক ইস্যুতে সরব ছিলেন, এবং তার ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু এই ভিডিও বার্তাটি বিশেষভাবে তার অবস্থান ও চিন্তাধারা পরিষ্কার করার চেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে, যদিও তিনি নিজে তার অবস্থান প্রকাশ করতে চাননি।
ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন তার ভিডিও বার্তায় বলেন যে তিনি শুরু থেকেই কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলেন। তিনি বলেন, যারা এই আন্দোলনে আহত বা নিহত হয়েছেন, তাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার পক্ষে তিনি ছিলেন। তবে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন যে, তিনি তার সমর্থকদের এবং অনুসারীদের কাছে তার অবস্থান যথাযথভাবে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি তার এই ব্যর্থতার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং তার ফলোয়ারদের কাছ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
তার এই বক্তব্যে আন্দোলন এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত হয়েছে, তবে তার মতে, তিনি তাদের কাছে তার বার্তা পুরোপুরি পৌঁছাতে পারেননি, যা তার জন্য একটি দুঃখের কারণ।
ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন তার ভিডিও বার্তায় উল্লেখ করেছেন যে, বর্তমান কাঠামোগত সংস্কারের জন্য তিনি বহু বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শুরু থেকেই সক্রিয় ছিলেন এবং গত ১৫ বছরে যারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, নিজেকে তাদের একজন হিসেবে তুলে ধরেন। তিনি জানান, দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে তিনি সবসময় যুক্ত থাকবেন এবং তার অবস্থান থেকে লড়াই চালিয়ে যাবেন।
এছাড়া, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে তাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আর দেখা যায়নি। সর্বশেষ তাকে ৪ আগস্ট রাতে একটি টেলিভিশন কন্টেন্টে দেখা গেছে। এরপর থেকে তিনি আর কোনো কার্যক্রমে প্রকাশ্যে আসেননি, যা তার অনুগামীদের মধ্যে কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কিছু নেতাকর্মী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন এবং বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী দেশ ছেড়ে পালানোর গুঞ্জন রয়েছে। ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনও দেশ ছেড়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে, তবে তার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ব্যারিস্টার সুমনের অবস্থান জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে, তার চেম্বারে আইনজীবী হিসেবে কাজ করা মডেল ও অভিনেত্রী পিয়া জান্নাতুল বলেছেন, "বর্তমানে ব্যারিস্টার সুমন কোথায় আছেন, তা জানি না।"
ব্যারিস্টার সুমন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং বিভিন্ন সামাজিক ইস্যুতে ফেসবুকে আলোচনা করে আলোচনায় এসেছেন। গত বছরের শুরু থেকে তিনি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন, যেখানে পিয়া জান্নাতুল তার চেম্বারে অ্যাসোসিয়েট আইনজীবী হিসেবে কাজ করছেন।