আবেগঘন স্ট্যাটাস দিলেন ইমরুল কায়েস

বাংলাদেশের ক্রিকেটার ইমরুল কায়েস সম্প্রতি ফেসবুকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন, যা তার ব্যক্তিগত অনুভূতি এবং ক্রিকেট ক্যারিয়ার সম্পর্কিত নানা দিক প্রকাশ করেছে। এই স্ট্যাটাসে, ইমরুল কায়েস তার ক্রিকেট যাত্রার নানা স্মৃতি, কঠিন মুহূর্ত, এবং দলের প্রতি তার ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা তুলে ধরেছেন।

আবেগঘন স্ট্যাটাস দিলেন ইমরুল কায়েস

স্ট্যাটাসে তিনি নিজের ক্যারিয়ার ও জীবনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন, যেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন তার কঠোর পরিশ্রম এবং বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের জন্য তার অঙ্গীকার। এছাড়াও, তিনি তার ভক্তদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং দলকে সমর্থন করার জন্য তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

এমন আবেগঘন স্ট্যাটাসের মাধ্যমে ইমরুল কায়েস তার ক্যারিয়ারের প্রতি গভীর ভালোবাসা এবং দেশপ্রেম দেখিয়েছেন, যা তার অনুরাগীদের মন ছুঁয়ে গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার স্ট্যাটাসটি ভাইরাল হয়েছে এবং এতে অনেকেই তার সাপোর্ট এবং প্রশংসা জানিয়ে মন্তব্য করেছেন।

এটি ইমরুল কায়েসের জন্য একটি মর্মস্পর্শী মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, যেখানে তিনি তার অভিজ্ঞতা ও ভাবনাগুলি সবার সাথে শেয়ার করে তার ব্যক্তিগত এবং পেশাদার জীবন সম্পর্কে নতুন আলো ফেলেছেন।

ইমরুল কায়েস সম্প্রতি তার টেস্ট ক্রিকেট এবং প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট বিদায়ের ঘোষণা দিয়েছিলেন, যা তার দীর্ঘ ক্রিকেট ক্যারিয়ারের একটি বড় মুহূর্ত। আগামীকাল, শনিবার, তিনি মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে তার শেষ চার দিনের ম্যাচ খেলবেন। এই উপলক্ষে, তিনি ফেসবুকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস শেয়ার করেছেন যা তার ক্যারিয়ার এবং জীবন সম্পর্কিত অনুভূতি ও স্মৃতি নিয়ে লেখা।

ইমরুল কায়েস তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন যে, ক্রিকেট তার জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং দেশের জাতীয় দলের হয়ে খেলতে পারা ছিল তার স্বপ্ন এবং গর্ব। তিনি তার পরিবার, সতীর্থ, কোচ, এবং ভক্তদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন যারা তার এই যাত্রায় তাকে সমর্থন দিয়েছেন। ক্রিকেটের প্রতি তার ভালোবাসা এবং দেশের জন্য খেলতে পারার আনন্দের কথাও শেয়ার করেছেন।

এটি তার জন্য একটি মর্মস্পর্শী মুহূর্ত, যেখানে তিনি তার জীবনের অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘোষণা করছেন, তবে দেশের ক্রিকেটে তার অবদান চিরকাল স্মরণীয় থাকবে। ইমরুল কায়েসের এই বিদায়ী মুহূর্তটি তার ভক্তদের জন্যও আবেগময় এবং তারা তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে তার অমূল্য অবদান ও ক্রিকেট ক্যারিয়ার সাফল্যের জন্য।

ইমরুল কায়েস তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “আসসালামু আলাইকুম, আমি ইমরুল কায়েস। বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমী দর্শকদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা নিয়ে একটা বিষয় জানাতে চাই–কালকে ১৬ তারিখ আমি আমার ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট এবং টেস্ট ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সমাপ্তি করতে যাচ্ছি। এটা আমার লাইফের গত ১৭ বছরের সবচেয়ে কঠিন এবং আবেগের মুহূর্ত।”

এই স্ট্যাটাসটি তার দীর্ঘ ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সমাপ্তির ইঙ্গিত দেয়, যা একেবারে আবেগময় এবং দুঃখজনক মুহূর্ত ছিল ইমরুল কায়েসের জন্য। তিনি তার ক্যারিয়ারের সেরা ১৭ বছর বাংলাদেশের ফার্স্ট ক্লাস এবং টেস্ট ক্রিকেট খেলেছেন এবং অনেক স্মৃতি তৈরি করেছেন। তার এই বিদায়ী বক্তব্যে তিনি তার ক্রিকেটপ্রেমী দর্শক এবং ভক্তদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তাদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

এটি ইমরুল কায়েসের জন্য একটি বিশেষ মুহূর্ত, কারণ তার জন্য এটি শুধুমাত্র একটি ক্যারিয়ারের সমাপ্তি নয়, বরং একটি দীর্ঘ পথচলার অধ্যায়ের শেষ, যা অনেক ক্রিকেটপ্রেমী তার জন্য স্মরণীয় রাখবে।

ইমরুল কায়েস তার ফেসবুক পোস্টে আরও বলেছেন, "টেস্ট ক্রিকেট সবসময় আমার জন্য স্পেশাল ছিল। আমি ক্রিকেট খেলা শুরু করার পর থেকেই, নিজের দেশের হয়ে টেস্ট খেলার স্বপ্ন দেখতাম। আর এই স্বপ্নটা দেখার জন্য যে মানুষটা আমাকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা এবং সাহস যুগিয়েছিলেন, সেই মানুষটা আজ আমার পাশে নাই! আমার থেকে অনেক দূরে আজ! সে মানুষটা না থাকলে হয়তো আমার ক্রিকেটার, কিংবা আজকের ইমরুল কায়েস হয়ে ওঠা হতো না। সেই মানুষটা আমার লাইফের সবচেয়ে স্পেশাল মানুষ, আমার বাবা!"

এখানে ইমরুল কায়েস তার বাবার প্রতি গভীর ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, যিনি তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের প্রতি প্রথম থেকেই অনেক অনুপ্রেরণা এবং সাহস যুগিয়েছিলেন। তার বাবা ছাড়া হয়তো ইমরুল কায়েসের ক্রিকেটে প্রবেশ এবং তার পরবর্তী সাফল্য সম্ভব হতো না। এটি ইমরুল কায়েসের জীবনের মর্মস্পর্শী এবং ব্যক্তিগত মুহূর্ত, যেখানে তিনি তার বাবার অবদান ও ভূমিকা উল্লেখ করে তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

তার বাবার না থাকা এই সময়টিতে ইমরুল কায়েসের জন্য আরো একটি কষ্টদায়ক বিষয়, এবং এই বিদায় মুহূর্তে তিনি তার বাবার অভাব অনুভব করছেন।

ইমরুল কায়েস তার ফেসবুক পোস্টে আরও লিখেছেন, "আমার বাবা সবসময় বলতো, ‘যেদিন তুমি লর্ডস এ খেলবা, আর ব্যাট উঠাবা দর্শকদের দিকে, সেইদিন আমি হবো সবচেয়ে Happy মানুষ!’"

এটি তার বাবার আশা এবং স্বপ্নের প্রতিফলন, যেখানে তিনি চেয়েছিলেন তার ছেলে ইমরুল কায়েস ক্রিকেটের সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছাক, বিশেষত লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে খেলার মধ্য দিয়ে। ইমরুল কায়েস তার বাবার সেই কথা স্মরণ করে বলছেন, যে তার বাবার স্বপ্ন ছিল, একদিন তার ছেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় মঞ্চে নিজের জায়গা তৈরি করবে এবং দর্শকদের সামনে ব্যাট উঠাবে।

এটি ইমরুল কায়েসের জীবনের একটি অত্যন্ত আবেগপূর্ণ মুহূর্ত, যেখানে তিনি তার বাবার স্বপ্ন এবং আশা পুরণ করার কথা উল্লেখ করছেন। তার বাবার সেই অন্তর্দৃষ্টি এবং অনুপ্রেরণা ইমরুল কায়েসকে তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারে সফল হতে উৎসাহিত করেছে।

ইমরুল কায়েস তার ফেসবুক পোস্টে আরো লিখেছেন, "মেহেরপুরে, আমার যখন মাত্র ৬-৭ বছর বয়স, তখন বাবা আমাকে একটা ক্রিকেট ব্যাট বানিয়ে দিয়েছিলেন। তারপর তিনি বল করতেন, আমি ব্যাট করতাম। আমি সবসময় চেষ্টা করেছি, ক্রিকেটটাকে আমার বাবার আদর্শ আর Honesty ‘র জালে ঘিরে রাখার।"

এটি ইমরুল কায়েসের জীবনের একটি অত্যন্ত মর্মস্পর্শী স্মৃতি, যেখানে তিনি তার শৈশবকাল ও তার বাবার অমূল্য অবদান স্মরণ করছেন। ৬-৭ বছর বয়সে তার বাবা তাকে নিজ হাতে একটি ক্রিকেট ব্যাট বানিয়ে দেন, যা তার ক্রিকেটপ্রেমের সূচনা। এই স্মৃতি তার কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে, কারণ তার বাবার অনুপ্রেরণা এবং মন্তব্য ছিল তার ক্রিকেট জীবন শুরু করার মূল ভিত্তি।

এছাড়া, ইমরুল কায়েস আরও উল্লেখ করেছেন যে, তিনি সবসময় চেষ্টা করেছেন তার ক্রিকেট জীবনকে তার বাবার আদর্শ, সততা এবং মুল্যবোধের জালে ঘিরে রাখতে। এটি তার বাবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং তার শিক্ষার প্রতি সম্মান ব্যক্ত করে, যা তাকে একজন সৎ এবং নৈতিক খেলোয়াড় হতে সহায়তা করেছে।

ইমরুল কায়েস তার ফেসবুক পোস্টে আরও লিখেছেন, "আমার টেস্ট ক্রিকেটের এই বিদায়বেলায় বাবা থাকলে হয়তো কিছুটা হলেও আমার আবেগ তার সাথে শেয়ার করতে পারতাম। আজ বাবা নেই কিন্তু বাবার স্বপ্ন পূরণ করে ‘মেহেরপুরের ইমরুল’ থেকে ‘বাংলাদেশের ইমরুল কায়েস’ হয়ে উঠতে যারা আমাকে ভালোবাসা আর অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন, সেই ‘বাংলাদেশের মানুষ’, সেই ‘আপনারা’ আজ আমার সাথে আছেন! কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই, আমার দেশের এবং দেশের বাইরের সেই মানুষদের প্রতি, যাদের সাপোর্ট এবং ভালোবাসা আমাকে ভালো খেলার সাহস ও শক্তি যুগিয়েছে বারবার।"

এটি ইমরুল কায়েসের গভীর আবেগ এবং তার বাবার প্রতি অশেষ শ্রদ্ধা ও অনুরাগের প্রকাশ। তার বাবা শরীরিকভাবে উপস্থিত না থাকলেও, তিনি অনুভব করেন যে তার বাবার স্বপ্ন এবং আশা পূরণ করতে পেরেছেন, বিশেষত বাংলাদেশের ইমরুল কায়েস হয়ে ওঠার মাধ্যমে। ইমরুল কায়েস তার ক্রিকেট ক্যারিয়ার সফলভাবে গড়তে পেরেছেন, এবং এ কারণে তিনি বাংলাদেশের জনগণ এবং বিশ্বজুড়ে তার ভক্তদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

এটি তার সেই আত্মবিশ্বাস এবং সাহস প্রকাশ, যা তাকে তার ক্রিকেট ক্যারিয়ার সফলভাবে চালিয়ে যেতে সহায়তা করেছে। ইমরুল কায়েসের কথাগুলি প্রমাণ করে, তিনি তার দেশবাসী ও ভক্তদের সহায়তা ও ভালোবাসার জন্য চিরকাল কৃতজ্ঞ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url