বিসিবি জোড়াতালি দিয়ে চলছে : আসিফ মাহমুদের মন্তব্য
বিসিবি জোড়াতালি দিয়ে চলছে : আসিফ মাহমুদের মন্তব্য
বিসিবি (বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড) নিয়ে আসিফ মাহমুদের মন্তব্য "জোড়াতালি দিয়ে চলছে" বাংলাদেশের ক্রিকেটের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তার হতাশা এবং সমালোচনার প্রতিফলন। তিনি সম্ভবত বোর্ডের ব্যবস্থাপনা, পরিকল্পনা এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে যে ত্রুটি ও অস্থিরতা দেখেছেন, তা নিয়েই এই মন্তব্য করেছেন।
অনেক সময়, ক্রিকেট বোর্ডের সিদ্ধান্ত বা কার্যক্রমের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় দলের খেলোয়াড় বা বিশেষজ্ঞরা এই ধরনের মন্তব্য করেন, যখন তারা মনে করেন যে সঠিক পরিকল্পনা ও কাঠামো নেই, এবং অনেক কিছু এলোমেলোভাবে চলছে।
বিসিবি যদি আরও শক্তিশালী ও সুসংগঠিত হতে চায়, তবে তাদেরকে আরও মনোযোগী হতে হবে দল পরিচালনা, খেলোয়াড়দের উন্নয়ন এবং দলের ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নির্ধারণে। তবে এমন মন্তব্য থেকে বোর্ডের কাছ থেকে আরও কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ারও প্রয়োজনীয়তা বোঝা যায়।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, তার সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন, তা দেশের ক্রিকেট পরিচালনা নিয়ে এক ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করছে। "জোড়াতালি দিয়ে চলছে" মন্তব্যটি বোঝাচ্ছে যে বিসিবির কার্যক্রম এবং সিদ্ধান্তগুলো হয়তো সঠিকভাবে পরিকল্পিত বা সুসংগঠিত নয়, এবং অনেক ক্ষেত্রে অস্থিরতার মধ্যে চলছে। এর মানে হতে পারে যে বোর্ডের ব্যবস্থাপনা এবং নেতৃত্বে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উন্নতির প্রয়োজন।
বিসিবি যদি দেশের ক্রিকেটকে আরও শক্তিশালী করতে চায়, তবে তাদেরকে আরও কার্যকরী, পরিকল্পিত এবং সুসংগঠিত পদক্ষেপ নিতে হবে। এর মধ্যে দল পরিচালনা, খেলোয়াড়দের উন্নয়ন, এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের সাফল্য বজায় রাখার জন্য একটি সুদৃঢ় কাঠামো গড়ে তোলা প্রয়োজন। আসিফ মাহমুদের এই মন্তব্য ক্রিকেট প্রশাসনের ভবিষ্যতের দিকে কিছু সংশয় এবং প্রতিক্রিয়া জাগাতে পারে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) গত ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর অনেক পরিবর্তন এবং রদবদলের মধ্য দিয়ে গেছে। বিশেষ করে, বোর্ডের সভাপতিসহ বেশ কিছু পদে পরিবর্তন আনা হলেও, তাতে বোর্ডের কর্মকাণ্ডে যে ধরনের গতি এবং সঠিক দিকনির্দেশনা আশা করা হয়েছিল, তা এখনও দৃশ্যমান হয়নি। সাবেক জাতীয় অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুলও এই বিষয়ে তার মন্তব্যে বিসিবির কর্মকাণ্ডে ঢিমেতালার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এ ধরনের পরিবর্তন এবং রদবদলের পর সাধারণত আরও কার্যকরী পরিকল্পনা, সুশাসন এবং সংগঠনের উন্নতি আশা করা যায়। কিন্তু যদি বোর্ডের কর্মকাণ্ড যথাযথভাবে চালিত না হয়, তাহলে দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা বাড়তে পারে। আমিনুল ইসলাম বুলবুলের মন্তব্য বোর্ডের কার্যক্রমের দিক থেকে আরও সতর্ক হওয়ার এবং অগ্রগতি নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার মন্তব্য, "বিসিবি জোড়াতালি দিয়ে চলছে," বোর্ডের অব্যবস্থাপনা ও অস্থিরতার প্রতি তার উদ্বেগ প্রকাশ করে। তার এই মন্তব্যের পর, তিনি বিসিবির উপর সরকারের হস্তক্ষেপ এবং পদক্ষেপের প্রতি আরও স্পষ্টতা দিয়েছেন।
তিনি বলছেন যে, বিসিবির কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা কাটানোর জন্য নতুন পরিচালক নিয়োগের চেষ্টা চলছে, যা বোর্ডের গতি ফেরানোর একটি পদক্ষেপ। এর পাশাপাশি, তিনি উল্লেখ করেন যে, সরকার ফেডারেশনগুলোর কার্যক্রমে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে প্রতিবছর তাদের কার্যক্রমের রিপোর্ট এবং অডিট রিপোর্ট সংগ্রহ করবে, এবং দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে তা খতিয়ে দেখা হবে।
তবে তিনি ফুটবলসহ কিছু ফেডারেশনের স্বায়ত্তশাসন বিষয়টি তুলে ধরে বলেন যে, এসব ফেডারেশন সরকারের হস্তক্ষেপের আওতায় পড়ে না, কারণ তাদের স্বায়ত্তশাসিত অবস্থান রয়েছে। এভাবে, তিনি বোর্ডের কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আনার উদ্যোগের কথা বলেছেন, তবে কিছু ফেডারেশন সম্পর্কে সরকারের হস্তক্ষেপের সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করেছেন।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া জানিয়েছেন যে, দেশের বিভিন্ন ফেডারেশনের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন যে, ফেডারেশনগুলোর বিভিন্ন কমিটি নিয়ে যে অভিযোগ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, যেখানে স্থবিরতা বা অকার্যকর পরিস্থিতি রয়েছে, সেখানে নতুন কমিটি গঠন করে সংকট সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এটি বোঝায় যে, সরকারের পক্ষ থেকে ফেডারেশনগুলোর কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা বাড়াতে নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা আরও কার্যকরীভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারে। পুনর্গঠন প্রক্রিয়া এবং নতুন কমিটি গঠনের মাধ্যমে সরকারের লক্ষ্য হলো দেশের খেলাধুলার উন্নয়ন এবং সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বাংলাদেশের বিভিন্ন ফেডারেশনের আর্থিক সংকটের বিষয়টি তুলে ধরে মন্তব্য করেছেন, বিশেষ করে ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ঋণের বিষয়ে। তিনি বলেন, "আওয়ামী লীগ সরকারের ঋণের বোঝা টানতে হচ্ছে বর্তমান সরকারকে," এবং ফুটবল ফেডারেশনসহ বেশ কিছু অন্যান্য ফেডারেশনেও ঋণ সমস্যা রয়েছে, যার মধ্যে বাফুফে ১৫ কোটি টাকার ঋণের বোঝা বহন করছে। কাজী সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে গত ১৬ বছরে বাফুফে এই ঋণের জালে পড়ে।
এ বিষয়ে আসিফ মাহমুদ আরও বলেছেন যে, সরকার ফেডারেশনগুলোর প্রতি বছরের হিসাব ও অডিট রিপোর্ট চেয়েছে, এবং সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন তারা ফেডারেশনগুলোর কাছে এই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পারেন। এর মাধ্যমে, সরকার ফেডারেশনগুলোর আর্থিক স্বচ্ছতা এবং দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে চায়, যাতে ঋণ সংকট সমাধান এবং ভবিষ্যতে আরো কার্যকরী ব্যবস্থাপনা করা যায়।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) শুরু হওয়া উপলক্ষে তিনটি স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজের বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি জানান, ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বাজেটের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও স্টেডিয়ামগুলোর সংস্কার কাজ নিজ উদ্যোগে করছে, কারণ এগুলো সরকারী মালিকানাধীন। উপদেষ্টা বলেন, "স্টেডিয়ামগুলো সরকারে অধীনে। তাই এর রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার আমাদের দায়িত্ব বলে মনে করি।"
এটি বোঝায় যে, ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সরকারী সম্পত্তির যত্ন নেওয়ার দায়িত্বে রয়েছে, এবং তাদের এই কাজগুলো এগিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে স্টেডিয়ামগুলোর মান উন্নয়ন এবং বিপিএল-এর মতো বড় ইভেন্ট সফলভাবে আয়োজন করা। তবে তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, যদি ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কোনো দেনা-পাওনার বিষয় থাকে (যেমন গেট মানি বা প্রচার স্বত্ত্ব), তাহলে তা আলাদাভাবে সমাধান করা হবে।
এখানে সরকারের ক্রীড়া খাতে বাজেটের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও স্টেডিয়ামের সংস্কারে মন্ত্রণালয়ের স্বতন্ত্র পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে সরকারের নিজস্ব দায়িত্ব পালনের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি স্পষ্ট হয়েছে।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারের নীতিমালা নিয়ে কাজ করার কথা বলেছেন, কারণ তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, বিগত সময়ে দলীয় পরিচয় এবং রাজনৈতিক প্রভাবে অনেক অযোগ্য এবং কম যোগ্য ব্যক্তি এই পুরস্কার পেয়েছেন। তার মতে, "আওয়ামী লীগের আমলে দলীয় প্রভাবে অনেক পুরস্কার পেয়েছে।"
এটি বোঝায় যে, সরকার ক্রীড়া পুরস্কারের স্বচ্ছতা ও সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করতে চায় এবং এই উদ্দেশ্যে একটি নির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। নতুন নীতিমালা অনুসরণ করে পুরস্কার প্রদান করা হবে, যাতে ক্রীড়া অঙ্গনের প্রকৃত যোগ্যরা পুরস্কৃত হন এবং দলীয় বা রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত থাকে পুরস্কারের প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে ক্রীড়া পুরস্কারের মর্যাদা এবং স্বচ্ছতা রক্ষা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।