বছরের শেষ ম্যাচে মেসির নতুন বিশ্বরেকর্ড
বছরের শেষ ম্যাচে মেসির নতুন বিশ্বরেকর্ড
লিওনেল মেসি, ফুটবলের এক জীবন্ত কিংবদন্তি, ২০২৪ সালে এসে তার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচেও এক নতুন বিশ্বরেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। প্রায় দেড় যুগের আন্তর্জাতিক ও ক্লাব ফুটবলে অসামান্য অর্জন তার, এবং তিনি প্রমাণ করেছেন কেন তিনি 'লিটল ম্যাজিশিয়ান' নামে পরিচিত।
"বছরের শেষ ম্যাচে মেসির নতুন বিশ্বরেকর্ড: ফুটবলের মহাকাব্যে আরও একটি অধ্যায় সংযোজন!" |
মেসি এর আগে বহু রেকর্ড গড়েছেন, যেমন এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোল করার রেকর্ড, সবচেয়ে বেশি ব্যালন ডি’অর জয়, এবং আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডসহ আরও অনেক। কিন্তু ২০২৪ সালে তার শেষ ম্যাচে এমন কিছু করে দেখিয়েছেন, যা ফুটবল ইতিহাসে তাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে।
মেসির এবারের রেকর্ডটি ছিল সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক গোল করার রেকর্ড। তিনি বিশ্বকাপ, কনমেবোল, কোপা আমেরিকা, এমনকি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচেও তার অসামান্য গোল দক্ষতার জন্য পরিচিত। তার অসাধারণ ফুটবল IQ, নিখুঁত শট নেওয়ার ক্ষমতা, আর ম্যাচের পরিস্থিতি বোঝার দক্ষতা তাকে বিশ্বের এক নম্বর ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
এছাড়াও, তার ক্লাব ক্যারিয়ারেও মেসি অপরিসীম সাফল্য অর্জন করেছেন। বার্সেলোনার হয়ে একাধিক চ্যাম্পিয়নস লিগ, লা লিগা, কোপা দেল রে, এবং সেরা গোলদাতা হওয়া, এমনকি প্যারিস সেন্ট-Germain (PSG) তে থেকেও চমকপ্রদ পারফরম্যান্স দেখানো—এসবের মাধ্যমে তিনি ফুটবল ইতিহাসের অবিস্মরণীয় নায়ক হয়ে উঠেছেন।
২০২৪ সালে মেসির শেষ ম্যাচে, তিনি যেভাবে নতুন একটি বিশ্বরেকর্ডে নাম তুলেছেন, তাতে তার ক্যারিয়ারের সফলতা এবং অবদানকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। মেসির ফুটবল প্রেমীদের কাছে অসীম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রয়েছে, এবং তিনি ফুটবলের ইতিহাসে চিরকাল বেঁচে থাকবেন।
আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি আবারও ইতিহাস তৈরি করেছেন পেরুর বিপক্ষে একটি ম্যাচে, যেখানে তার অসামান্য অ্যাসিস্টের মাধ্যমে নতুন একটি বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন। এই ম্যাচে আর্জেন্টিনার একমাত্র গোলটি করেন ইন্টার মিলানের তারকা স্ট্রাইকার লাউতারো মার্টিনেজ, যিনি মেসির কাছ থেকে পাওয়া এক নিখুঁত ক্রসকে ভলি করে জালে পাঠান। তবে, এই গোলের চেয়েও বড় অর্জন ছিল মেসির অ্যাসিস্ট, যা তাকে আন্তর্জাতিক ফুটবলে সবচেয়ে বেশি অ্যাসিস্ট করার রেকর্ডে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
মেসি এই গোলের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ৫৮ বার সহায়তা করলেন, এবং দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি অ্যাসিস্টের মালিক হয়ে গেলেন। তিনি এই মাইলফলক পৌঁছানোর জন্য তার ক্যারিয়ারে একাধিক বার অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন, এবং তার অসাধারণ ভিশন, পাসিং দক্ষতা, ও ম্যাচের পরিস্থিতি বোঝার ক্ষমতা তাকে বিশ্বসেরা অ্যাসিস্টগিভার বানিয়েছে।
এদিকে, মেসি একাই সবার ওপরে আছেন এমন নয়। তার সঙ্গে এই রেকর্ডে আছেন যুক্তরাষ্ট্রের কিংবদন্তি ফুটবলার ল্যান্ডন ডনোভান, যিনি নিজেও আন্তর্জাতিক ফুটবলে অসংখ্য অ্যাসিস্ট করেছেন। তবে, মেসির এই অর্জন ফুটবল বিশ্বের জন্য নতুন একটি সাফল্য, যা তার মহান ক্যারিয়ারের আরও একটি চমকপ্রদ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে।
এমনকি, মেসি যদি এখন ক্যারিয়ারের শেষ সময়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন, তাও তার অসাধারণ প্রভাব ফুটবলের আকাশে অটুট থাকবে, এবং তিনি প্রতিটি মুহূর্তে নতুন রেকর্ডের জন্ম দেন।
লিওনেল মেসি ফুটবলে একের পর এক নতুন মাইলফলক তৈরি করে চলেছেন, এবং পেরুর বিপক্ষে ম্যাচে তার নতুন অর্জন সেই ধারাবাহিকতারই অংশ। আন্তর্জাতিক ফুটবলে ৫৮টি অ্যাসিস্ট করে, মেসি এখন দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি অ্যাসিস্টের রেকর্ডে নিজের নাম তুলেছেন। তবে, মেসি তার ১৯১ ম্যাচে এই রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের কিংবদন্তি ল্যান্ডন ডনোভান ১৫৭ ম্যাচে ৫৮টি অ্যাসিস্ট করেছেন।
বিশ্বরেকর্ডের এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার, যিনি ১২৮ ম্যাচে ৫৭টি অ্যাসিস্ট দিয়েছেন। নেইমারের অসাধারণ পাসিং দক্ষতা এবং গোলের সুযোগ তৈরি করার ক্ষমতা তাকে এই রেকর্ডে স্থান দিয়েছে, এবং তিনি এখনো তার ক্যারিয়ার অব্যাহত রেখেছেন।
বর্তমানে সক্রিয় ফুটবলারদের মধ্যে, মেসির মতো বড় রেকর্ডের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য কেভিন ডে ব্রুইন (৪৯ অ্যাসিস্ট) এবং ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো (৪৮ অ্যাসিস্ট) রয়েছেন। এই দুই ফুটবল তারকা তাদের অসাধারণ পাসিং দক্ষতা এবং সহায়তামূলক খেলার জন্য সুপরিচিত, এবং তাদের নামও এই রেকর্ডের তালিকায় দ্রুত উঠে আসছে।
এখন, মেসি যখন এই নতুন রেকর্ডের অধিকারী, তখন তার ক্যারিয়ারের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা আরও বেড়ে যাবে। তার বিশ্বমানের ফুটবল দক্ষতা এবং সততা তাকে আরও বেশি ফুটবলপ্রেমীর হৃদয়ে স্থান দিয়েছে, এবং তার রেকর্ড গড়ার ধারাও থামার কোনো লক্ষণ নেই।
আজকের এই জয় পরবর্তী আর্জেন্টিনার সংগ্রহ ১২ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট, যা লাতিন অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে তাদের শীর্ষস্থানকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে। আর্জেন্টিনার বর্তমান পয়েন্ট নিয়ে তারা ৫ পয়েন্টের ব্যবধানে এগিয়ে আছে। তবে, উরুগুয়ে তাদের ম্যাচে জয় পেলে পয়েন্টের ব্যবধান ৩ এ নেমে আসবে, কিন্তু শীর্ষস্থানে আর্জেন্টিনাকে এখনও টলানো যাবে না।
আর্জেন্টিনার পরবর্তী বিশ্বকাপ বাছাই ম্যাচ হবে ২০২৫ সালের মার্চে, যখন তারা মাঠে ফিরে আসবে। এই বিরতি তাদের জন্য নতুন করে শক্তি সঞ্চয়ের সুযোগ এনে দেবে, এবং শীর্ষস্থান ধরে রাখতে তারা আরও আগ্রাসী হবে। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের বাকি ম্যাচগুলো তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে, যেখানে মেসি এবং তার সতীর্থরা নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স দিয়ে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপে জায়গা করে দেওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে।
এখন পর্যন্ত তাদের অসাধারণ খেলা এবং পয়েন্ট সংগ্রহে আর্জেন্টিনার পথচলা চোখে পড়ার মতো। আশা করা যায়, পরবর্তী ম্যাচগুলোতেও তারা নিজেদের শক্তি ও দক্ষতা দিয়ে দর্শকদের মনে চিরকাল জায়গা করে নেবে।