দাঁত পরিষ্কার করার উপায়

দাঁত পরিষ্কার করার উপায়

দাঁতের স্বাস্থ্য বজায় রাখা আমাদের প্রতিদিনের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সঠিকভাবে দাঁত পরিষ্কার করা না হলে মুখগহ্বরের নানা সমস্যা যেমন দাঁতের ক্ষয়, মাড়ির রোগ এবং দাঁতের কালো হওয়া হতে পারে। 

দাঁত পরিষ্কার করার উপায়
দাঁত পরিষ্কার করার উপায়: সুস্থ হাসির জন্য সহজ এবং কার্যকরী টিপস

তাই দাঁত পরিষ্কার রাখার জন্য নিচে উল্লেখিত উপায়গুলো অনুসরণ করা উচিত:

১. দাঁত ব্রাশ করা: 

সঠিক ব্রাশ ব্যবহার: প্রথমত, একটি ভালো মানের দাঁত ব্রাশ নির্বাচন করা জরুরি। নরম ব্রিসলসযুক্ত ব্রাশ ব্যবহার করলে দাঁতের ক্ষতি না হয় এবং মাড়ি ভালো থাকে।দিনে দুইবার ব্রাশ করুন: সকালে এবং রাতে খাবার খাওয়ার পর দাঁত ব্রাশ করা উচিত। রাতে ব্রাশ করলে মুখে থাকা ব্যাকটেরিয়া এবং খাবারের গন্ধ দূর হয়। সঠিক পদ্ধতিতে ব্রাশ করা: দাঁত ব্রাশ করার সময় ব্রাশটি 45 ডিগ্রি কোণে দাঁতের সঙ্গে রেখে, মৃদু কিন্তু যথেষ্ট চাপ দিয়ে ব্রাশ করুন। ২-৩ মিনিট ধরে প্রতিটি দাঁত ব্রাশ করা উচিত।

২. ফ্লস ব্যবহার করা:

দাঁতের মাঝখানের অংশগুলো পরিষ্কার রাখতে দাঁত ফ্লস করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দাঁত ফ্লস ব্যবহার করলে সেই স্থানগুলোতে থাকা খাদ্য কণা এবং ব্যাকটেরিয়া দূর হয়, যা দাঁতের ক্ষয় এবং মাড়ির রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।

৩. মাউথওয়াশ ব্যবহার করা:

মাউথওয়াশ ব্যবহারের মাধ্যমে মুখের ব্যাকটেরিয়া কমানো যায় এবং মুখে তাজা গন্ধ আসে। এটি দাঁতের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক এবং মুখের প্রদাহ কমায়।

৪. প্রাকৃতিক উপায়ে দাঁত পরিষ্কার:

বেকিং সোডা: বেকিং সোডা একটি প্রাকৃতিক দাঁত সাদা করার উপাদান। এটি দাঁতের উপর জমে থাকা দাগ দূর করতে সাহায্য করে এবং মুখের গন্ধও তাজা রাখে।
নুন (Salt): নুনে অ্যান্টিসেপটিক গুণ রয়েছে, যা মাড়ির প্রদাহ কমাতে এবং দাঁতের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এক চিমটি নুন নিয়ে তা দিয়ে দাঁত ব্রাশ করা যেতে পারে।

৫. পর্যাপ্ত পানি পান করা: 

দাঁত পরিষ্কার রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করা গুরুত্বপূর্ণ। পানি মুখের মধ্যে থাকা খাবারের কণাগুলো ধুয়ে ফেলতে সাহায্য করে এবং মুখে ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধির ঝুঁকি কমায়।

৬. খাদ্য নির্বাচন:

চিনি ও অ্যাসিডিক খাবার কমানো: অতিরিক্ত চিনি এবং অ্যাসিডিক খাবার (যেমন, কোমল পানীয়, সাইট্রাস ফল) খাওয়া থেকে বিরত থাকুন, কারণ এটি দাঁতের ক্ষয়ে সাহায্য করতে পারে।
ফল ও শাকসবজি খাওয়া: আপেল, গাজর, শশা, এবং অন্যান্য ফল ও শাকসবজি দাঁতের জন্য ভালো। এগুলি দাঁত পরিষ্কার রাখতে এবং মুখের গন্ধ তাজা রাখতে সাহায্য করে।

৭. নিয়মিত দন্তচিকিৎসক পরিদর্শন:

প্রতি ছয় মাসে একবার দন্তচিকিৎসকের কাছে নিয়মিত চেকআপ এবং ক্লিনিং করানো উচিত। এটি দাঁতের সমস্যা সময়মতো ধরতে এবং তা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। দাঁত পরিষ্কার রাখা শুধু সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নয়, বরং সারা শরীরের স্বাস্থ্য রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক দাঁত পরিষ্কারের অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে দাঁতের ক্ষয়, মাড়ির রোগ, এবং মুখের অন্যান্য সমস্যা এড়ানো সম্ভব।

কি ব্যবহার করলে দাঁত পরিষ্কার হয়?

দাঁত পরিষ্কার রাখতে এবং সুস্থ রাখতে কিছু সাধারণ উপকরণ এবং পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত। সঠিকভাবে দাঁত পরিষ্কার করার জন্য যা ব্যবহার করা যেতে পারে তা নিম্নরূপ:

১. দাঁত ব্রাশ:

সঠিক দাঁত ব্রাশ: দাঁত ব্রাশের ব্রিসলস নরম বা মাঝারি হওয়া উচিত, যাতে দাঁতের ক্ষতি না হয়। প্রতিদিন দুইবার ব্রাশ করতে হবে।

সঠিক পদ্ধতিতে ব্রাশ: দাঁতের উপরে এবং নিচে সঠিক কোণে ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে এবং প্রতিটি দাঁত ২-৩ মিনিট ধরে ব্রাশ করতে হবে।

২. টুথপেস্ট (Toothpaste):

ফ্লুরাইডযুক্ত টুথপেস্ট: দাঁত পরিষ্কারের জন্য ফ্লুরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করা উচিত, যা দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধ করে এবং দাঁত মজবুত রাখে।
প্রাকৃতিক টুথপেস্ট: যদি আপনি প্রাকৃতিক উপাদানে বিশ্বাস করেন, তাহলে বেকিং সোডা বা নুন মিশ্রিত টুথপেস্ট ব্যবহার করতে পারেন।

৩. ফ্লস (Dental Floss):

দাঁতের মাঝে খাবারের কণা এবং ব্যাকটেরিয়া পরিষ্কার করতে ফ্লস ব্যবহার করতে হবে। এটি দাঁতের মাঝের অংশে পৌঁছাতে সাহায্য করে যেখানে ব্রাশ পৌঁছাতে পারে না।

৪. মাউথওয়াশ (Mouthwash):

মাউথওয়াশ ব্যবহারের মাধ্যমে মুখে থাকা ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করা যায় এবং মুখের তাজা গন্ধ বজায় থাকে। এটি মাড়ির প্রদাহ কমাতে এবং দাঁতের সুরক্ষায় সাহায্য করে।

৫. বেকিং সোডা (Baking Soda):

বেকিং সোডা একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা দাঁতের দাগ দূর করতে সাহায্য করে এবং দাঁত সাদা রাখে। এটি হালকা স্ক্রাবিং এফেক্ট তৈরি করে, যা দাঁত পরিষ্কার রাখে।

. নুন (Salt):

নুন দাঁতের জন্য প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে। এক চিমটি নুন দিয়ে দাঁত ব্রাশ করলে মাড়ির প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং দাঁত পরিষ্কার রাখে।

৭. খাবারের ধরন:

ফল ও শাকসবজি: আপেল, গাজর, শশা ইত্যাদি খাবারের মধ্যে প্রাকৃতিক ক্লিনজিং উপাদান থাকে, যা দাঁতের উপর জমে থাকা কণা পরিষ্কার করতে সহায়ক।

জিরা বা গরম মসলাও: জিরা, হলুদ, বা কাঁচা মরিচের মতো মসলা দাঁতের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

৮. পর্যাপ্ত পানি পান:

পানি খাওয়া দাঁতের উপর জমে থাকা খাবারের কণা ধুয়ে ফেলে এবং মুখের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি কমায়।

৯. দাঁতের বিশেষ ব্রাশিং টুলস:

ইলেকট্রিক টুথব্রাশ: ইলেকট্রিক টুথব্রাশের সাহায্যে দাঁত আরো ভালোভাবে পরিষ্কার করা যায় এবং এটি বেশি কার্যকরী হতে পারে। দাঁত পরিষ্কার রাখতে প্রয়োজন সঠিক উপকরণ এবং সঠিক পদ্ধতির ব্যবহার। সঠিক ব্রাশ, টুথপেস্ট, ফ্লস, মাউথওয়াশ, এবং প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করলে দাঁত সুস্থ থাকবে এবং স্বাস্থ্য সমস্যা কমবে।

সঠিকভাবে দাঁত পরিষ্কার করার উপায়?

দাঁত পরিষ্কার রাখা আমাদের মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিকভাবে দাঁত পরিষ্কার না করলে দাঁতে ক্ষয়, মাড়ির রোগ এবং মুখের গন্ধের মতো সমস্যা হতে পারে। নিচে সঠিকভাবে দাঁত পরিষ্কার করার কিছু কার্যকরী উপায় দেওয়া হলো:

১. দাঁত ব্রাশ করা:

ব্রাশের নির্বাচন: একটি ভালো মানের দাঁত ব্রাশ বেছে নিন, যার ব্রিসলস নরম বা মাঝারি হবে। অত্যধিক শক্ত ব্রিসলস দাঁতের এমেল এবং মাড়ির ক্ষতি করতে পারে। 

ব্রাশিংয়ের সঠিক পদ্ধতি: দাঁত ব্রাশ করার সময় ব্রাশটি 45 ডিগ্রি কোণে রেখে মৃদু গতিতে ঘূর্ণায়মান বা ছোট ছোট গোলাকার গতিতে ব্রাশ করুন। এটি দাঁতের উপরের এবং নিচের দিকের সমস্ত অংশ পরিষ্কার করবে।

২ মিনিট ধরে ব্রাশ করুন: দাঁত ভালোভাবে পরিষ্কার করতে অন্তত ২ মিনিট দাঁত ব্রাশ করুন। বিশেষ করে দাঁতের পেছনের অংশ, যেখানে খাদ্য কণা জমে থাকতে পারে, সেগুলো ভালোভাবে ব্রাশ করুন।

২. ফ্লস ব্যবহার করা:

দাঁতের মাঝখানে জমে থাকা খাবারের কণা এবং ব্যাকটেরিয়া পরিষ্কার করতে দাঁত ফ্লস ব্যবহার করুন। ফ্লস ব্যবহার করলে এমন স্থানগুলিও পরিষ্কার হয় যেখানে ব্রাশ পৌঁছাতে পারে না। ফ্লস করার সময় মাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, এজন্য মৃদু এবং সতর্কভাবে ব্যবহার করুন।

৩. মাউথওয়াশ ব্যবহার করা:

ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ: মাউথওয়াশ মুখের মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়া কমাতে সাহায্য করে এবং মুখের গন্ধ তাজা রাখে।
ব্যবহার পদ্ধতি: মাউথওয়াশ মুখে কিছুক্ষণ চবাতে চিবাতে থাকুন এবং পরে তা থুথু দিন। এটি মাড়ি এবং দাঁত সুরক্ষিত রাখতে সহায়ক।

৪. টুথপেস্টের সঠিক ব্যবহার:

ফ্লুরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করুন, যা দাঁতের ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে। টুথপেস্টের মধ্যে থাকা অন্যান্য উপাদানও দাঁত সাদা এবং তাজা রাখে। টুথপেস্ট খুব বেশি না নিয়ে ব্রাশ করতে শুরু করুন। খুব বেশি টুথপেস্ট ব্যবহার দাঁতের ক্ষতি করতে পারে।

৫. দাঁত পরিষ্কার করার সময় সঠিক গতি অনুসরণ করুন:

দাঁত ব্রাশ করার সময় খুব বেশি শক্তি প্রয়োগ করবেন না। মৃদু ঘষে দাঁত পরিষ্কার করা উচিত, যাতে দাঁতের এমেল এবং মাড়ি নিরাপদ থাকে।

৬. পর্যাপ্ত পানি পান করা:

পানি পান করলে মুখের মধ্যে জমে থাকা খাবারের কণাগুলো ধুয়ে যায় এবং ব্যাকটেরিয়া কমতে সাহায্য করে।

৭. খাবারের সময় দাঁত পরিষ্কার:

খাবার খাওয়ার পর যদি ব্রাশ করার সুযোগ না থাকে, তবে পানি দিয়ে মুখ গিলুন বা এক টুকরো শশা বা আপেল চিবান। এই খাবারের মধ্যে প্রাকৃতিক ক্লিনজিং উপাদান থাকে, যা দাঁতের উপর জমে থাকা কণা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।

৮. সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা:

চিনি এবং অ্যাসিডিক খাবার কম খাওয়া উচিত, কারণ এগুলি দাঁতের ক্ষয় সৃষ্টি করতে পারে। শাকসবজি, ফল এবং ডেইরি প্রোডাক্টের মতো স্বাস্থ্যকর খাবার দাঁতের জন্য ভালো।

৯. দাঁতের স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং নিয়মিত ডেন্টিস্ট পরিদর্শন:

প্রতি ৬ মাসে একবার ডেন্টিস্টের কাছে চেকআপ এবং ক্লিনিং করান। এটি দাঁতের কোনো সমস্যা আগে থেকেই ধরা পড়তে এবং তা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। সঠিকভাবে দাঁত পরিষ্কার করার জন্য একটি নিয়মিত রুটিন তৈরি করা জরুরি। ব্রাশ, ফ্লস, মাউথওয়াশ, এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাস এই প্রক্রিয়াটিকে কার্যকর করবে এবং দাঁতের স্বাস্থ্যের দীর্ঘস্থায়িত্ব নিশ্চিত করবে।

ঘরে বসে দাঁতের সাদা গহ্বর দূর করার উপায়?

দাঁতের সাদা গহ্বর (এলাচের দাগ বা ট্যার) সাধারণত দাঁতের উপর জমে থাকা ময়লা, খাদ্য কণা বা প্লাকের কারণে তৈরি হয়। আপনি ঘরে বসেই কিছু প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে এই সমস্যা দূর করতে পারেন। তবে, মনে রাখবেন যে, যদি গহ্বর বা দাগ খুব বেশি গভীর বা স্থায়ী হয়, তবে ডেন্টিস্টের পরামর্শ নেওয়া সবচেয়ে ভালো।

১. বেকিং সোডা (Baking Soda)

বেকিং সোডা দাঁতের দাগ এবং গহ্বর দূর করতে সাহায্য করে। এটি প্রাকৃতিক স্ক্রাবিং উপাদান হিসেবে কাজ করে, যা দাঁতের দাগ কমাতে সহায়ক। এক চা চামচ বেকিং সোডা নিন এবং এতে কিছুটা পানি মেশান। মিশ্রণটি দিয়ে দাঁত ব্রাশ করুন ১-২ মিনিটের জন্য। এটি সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করতে পারেন।

২. লেবুর রস এবং বেকিং সোডা

লেবুর রসের অ্যাসিড দাঁতের দাগ দূর করতে সাহায্য করে এবং বেকিং সোডার সঙ্গে মিশিয়ে এটি কার্যকরী হয়ে ওঠে। আধা চা চামচ বেকিং সোডা এবং এক চা চামচ লেবুর রস মেশান। এই মিশ্রণটি দিয়ে দাঁত ব্রাশ করুন ১ মিনিট। এরপর ভালোভাবে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে এক বা দুইবার ব্যবহার করুন।

৩. নারিকেল তেল (Oil Pulling)

নারিকেল তেল দিয়ে মুখে গড়ানো বা 'অয়েল পুলিং' দাঁতের দাগ এবং গহ্বর দূর করতে সহায়ক হতে পারে। এটি দাঁতের প্লাক কমায় এবং মুখের ব্যাকটেরিয়া দূর করে। এক চা চামচ নারিকেল তেল নিয়ে ১০-১৫ মিনিট মুখে চবাতে থাকুন। এরপর ভালোভাবে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে করতে পারেন।

৪. আলু বা গাজর

গাজর বা আলু চিবানোর মাধ্যমে দাঁতের উপর জমে থাকা খাবারের কণা এবং ময়লা পরিষ্কার হতে সাহায্য করে। এই সবজি প্রাকৃতিক ক্লিনজিং উপাদান হিসেবে কাজ করে এবং দাঁতকে সাদা রাখতে সাহায্য করে। গাজর বা আলু খাওয়ার সময় তাদের চিবানোর মাধ্যমে দাঁত পরিষ্কার করতে পারেন। এটি দাঁতের উপর জমে থাকা প্লাক পরিষ্কার করতে সহায়ক হবে।

৫. স্ট্রবেরি (Strawberry)

স্ট্রবেরি প্রাকৃতিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা দাঁত সাদা করতে সহায়ক। এতে থাকা ম্যালিক অ্যাসিড দাঁতের দাগ দূর করে। একটি স্ট্রবেরি নিন এবং এটি কোষ্ঠীতে মাখিয়ে দাঁতে লাগান। ৫-৭ মিনিট রেখে ভালোভাবে মুছে ফেলুন। সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করুন।

৬. নুন (Salt)

নুন প্রাকৃতিক স্ক্রাবিং উপাদান হিসেবে কাজ করে, যা দাঁতের সাদা গহ্বর দূর করতে সাহায্য করে। এক চা চামচ নুন নিয়ে তা কিছুটা পানি দিয়ে মিশিয়ে দাঁত ব্রাশ করুন। এটি ২-৩ মিনিট করে দাঁতে ঘষুন এবং পরে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার এটি ব্যবহার করুন।

৭. সুন্দরী তেল (Clove Oil)

এটি দাঁতের জন্য প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক এবং জীবাণুনাশক। এটি দাঁতের দাগ এবং গহ্বর দূর করতে সহায়ক হতে পারে। কয়েক ফোঁটা সুন্দরী তেল নিয়ে এটি একটি তুলার কাপড়ে লাগান। তারপর তা দাঁতে লাগিয়ে রাখুন কিছু সময়ের জন্য। এই প্রক্রিয়া সপ্তাহে একবার করতে পারেন।

৮. পানি

পানির মাধ্যমে দাঁতের উপর জমে থাকা খাবারের কণা এবং ব্যাকটেরিয়া ধুয়ে ফেলা যায়। খাওয়ার পর পানি পান করলে দাঁতের সাদা গহ্বরের পরিমাণ কমে যাবে। খাবার খাওয়ার পর ভালোভাবে পানি পান করুন। বিশেষ করে, প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার পর এটি দাঁত পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।

৯. কলা (Banana Peel)

কলা খাওয়ার পর কলার খোসাটি দাঁতে ঘষে দিলে এটি দাঁতের দাগ দূর করতে সহায়ক হতে পারে। এতে থাকা পটাশিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ দাঁতের সুরক্ষা এবং সাদা হতে সাহায্য করে। কলার খোসা নিয়ে দাঁতের উপরে ঘষুন ২-৩ মিনিট। এরপর দাঁত পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

দাঁতের সাদা গহ্বর বা দাগ দূর করার জন্য প্রাকৃতিক উপায়গুলো বেশ কার্যকরী হতে পারে। তবে, ঘরে বসে এসব পদ্ধতি ব্যবহার করতে হলেও, যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী বা গুরুতর হয়, তাহলে ডেন্টিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

নকল দাঁত পরিষ্কার করার উপায়?

নকল দাঁত বা ডেন্টাল প্রোথেসিস (যেমন ডেন্টার, ব্রিজ, বা ইমপ্ল্যান্ট) পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলি খাদ্য কণা, ব্যাকটেরিয়া এবং প্লাক জমে দাঁতের ক্ষয় এবং মাড়ির সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। সঠিকভাবে নকল দাঁত পরিষ্কার না করলে দুর্গন্ধ বা মাড়ির সংক্রমণও হতে পারে। নিচে কিছু কার্যকরী উপায় দেওয়া হলো, যা দিয়ে আপনি আপনার নকল দাঁত পরিষ্কার রাখতে পারেন।

১. নরম ব্রাশ ব্যবহার করা:

নকল দাঁত পরিষ্কার করার জন্য নরম ব্রিস্টলযুক্ত একটি বিশেষ ব্রাশ ব্যবহার করুন। সাধারণ দাঁত ব্রাশ খুব শক্ত হতে পারে, যা নকল দাঁতের ক্ষতি করতে পারে। ব্রাশটি ভালোভাবে ধুয়ে নিন এবং দাঁতের উপরে নরমভাবে ঘষুন। প্রতিদিন সকালে এবং রাতে ডেন্টাল প্রোথেসিস ব্রাশ করুন। যদি মেলামাইন বা প্যালিস্টিক ব্যবহার করা হয়, তবে খুব বেশি চাপ প্রয়োগ করবেন না, কারণ এতে দাঁত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

২. ডেন্টাল ক্লিনজার (Dental Cleanser) ব্যবহার করা: বিশেষ ডেন্টাল ক্লিনজার বা ট্যাবলেট রয়েছে যা নকল দাঁত পরিষ্কার করতে ব্যবহৃত হয়। এগুলি প্লাক এবং ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে এবং দাঁতকে সতেজ রাখে। এক কাপ গরম পানিতে ডেন্টাল ক্লিনজার ট্যাবলেট ফেলে দিন এবং এতে নকল দাঁত ১০-১৫ মিনিট রেখে দিন। এরপর একটি নরম ব্রাশ দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করুন এবং পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

৩. নুনের পানি দিয়ে পরিষ্কার করা:

নুন প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক, যা দাঁতের উপর জমে থাকা ব্যাকটেরিয়া ও ময়লা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এক কাপ গরম পানিতে আধা চা চামচ নুন মেশান। এতে নকল দাঁত ভিজিয়ে রাখুন এবং কিছু সময় পর তা পরিষ্কার করুন।

৪. ভিনেগার বা সাইট্রাসের পানি ব্যবহার করা: 

ভিনেগার বা সাইট্রাসের পানি (যেমন লেবুর রস) দাঁতের উপর জমে থাকা দাগ ও ময়লা দূর করতে সহায়ক হতে পারে। এক কাপ গরম পানিতে এক চা চামচ সাইট্রাস বা ভিনেগার মেশান। নকল দাঁত এতে ৫-১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন এবং পরবর্তী সময়ে পরিষ্কার ব্রাশ দিয়ে মুছে ফেলুন।

৫. বিশেষ ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করা:

নকল দাঁতের মধ্যে খাদ্য কণা জমে থাকলে তা পরিষ্কার করার জন্য একটি বিশেষ ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করুন। এটি নকল দাঁতের মাঝখানে থাকা অতি ক্ষুদ্র কণা সরাতে সাহায্য করবে। ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করে দাঁতের প্রতিটি অংশ পরিষ্কার করুন। ফ্লসের মাধ্যমে দাঁত পরিষ্কার করার সময় খুব বেশি শক্তি প্রয়োগ করবেন না।

৬. গরম পানি এবং সাবান ব্যবহার করা; 

গরম পানির মধ্যে কিছু সাবান মিশিয়ে নকল দাঁত পরিষ্কার করতে পারেন। এটি ময়লা এবং ট্যারি দূর করে দাঁতকে সাদা করতে সহায়ক হতে পারে। এক কাপ গরম পানিতে সামান্য সাবান মিশিয়ে নকল দাঁত ভিজিয়ে রাখুন। কয়েক মিনিট পর ব্রাশ দিয়ে মৃদু পরিষ্কার করুন।

৭. ডেন্টাল প্রোটেক্টর ব্যবহার করা:

নকল দাঁত দীর্ঘ সময় পরিষ্কার রাখতে ডেন্টাল প্রোটেক্টর ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি দাঁতের গহ্বর বন্ধ রাখে এবং দাঁতের মধ্যে অযাচিত কণা জমতে দেয় না।

৮. রেগুলার ডেন্টাল চেকআপ:

নকল দাঁত ব্যবহারকারীদের নিয়মিত ডেন্টিস্টের কাছে চেকআপ করা উচিত। এটি দাঁতের কোনো ক্ষতি বা ক্ষয় হওয়া ঠেকাতে সাহায্য করবে এবং যেকোনো সমস্যা আগে থেকেই শনাক্ত করা যাবে।

৯. নকল দাঁতের সংরক্ষণ:

যখন আপনি নকল দাঁত ব্যবহার করছেন না, তখন সেগুলো একটি পরিষ্কার এবং শুকনো জায়গায় রাখুন। একে তাপ বা আর্দ্রতা থেকে দূরে রাখুন, যাতে দাঁত ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

১০. অতিরিক্ত শক্ত বা আঠালো খাবার এড়ানো:

নকল দাঁত পরিষ্কার রাখার জন্য খুব শক্ত বা আঠালো খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন, কারণ এটি দাঁতে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে এবং পরিষ্কার করতে কঠিন হতে পারে।

নকল দাঁত পরিষ্কার করার জন্য নিয়মিত যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিকভাবে দাঁত পরিষ্কার করলে এটি দীর্ঘস্থায়ীভাবে ভালো থাকবে এবং মুখের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url