হলুদ দাঁত সাদা করার উপায় কি?
হলুদ দাঁত সাদা করার উপায় কি?
হলুদ দাঁত সাদা করার উপায়: প্রাকৃতিক এবং সহজ পদ্ধতি
হলুদ দাঁত একটি সাধারণ সমস্যা, যা মূলত দাঁতের উপরে প্লাক বা খাদ্য কণা জমার কারণে হয়। এই সমস্যা দূর করতে আপনি কিছু প্রাকৃতিক উপায় ব্যবহার করতে পারেন যা দাঁতকে সাদা এবং উজ্জ্বল রাখবে।
"হলুদ দাঁত সাদা করার প্রাকৃতিক এবং কার্যকরী উপায়গুলি" |
এখানে কিছু কার্যকরী উপায় দেওয়া হলো:
১. বেকিং সোডা (Baking Soda)
বেকিং সোডা দাঁতের দাগ দূর করতে সাহায্য করে এবং প্রাকৃতিক স্ক্রাবিং উপাদান হিসেবে কাজ করে। এটি দাঁতের উপরের জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করে সাদা করতে সহায়ক। এক চা চামচ বেকিং সোডা নিন এবং এতে কিছুটা পানি মেশান। মিশ্রণটি দিয়ে দাঁত ব্রাশ করুন ২-৩ মিনিটের জন্য। এটি সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করতে পারেন।
২. লেবুর রস এবং বেকিং সোডা
লেবুর রস প্রাকৃতিক অ্যাসিড হিসেবে কাজ করে, যা দাঁতের দাগ দূর করতে সহায়ক। বেকিং সোডার সাথে মিশিয়ে এটি আরও কার্যকরী হয়ে ওঠে। এক চা চামচ বেকিং সোডা এবং ১ চা চামচ লেবুর রস মিশান। এই মিশ্রণটি দিয়ে দাঁত ব্রাশ করুন ১-২ মিনিট। পরে ভালোভাবে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
৩. স্ট্রবেরি (Strawberry)
স্ট্রবেরি প্রাকৃতিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা দাঁত সাদা করতে সাহায্য করে। এতে থাকা ম্যালিক অ্যাসিড দাঁতের দাগ দূর করতে সাহায্য করে। একটি স্ট্রবেরি নিন এবং এটি কোষ্ঠীতে মাখিয়ে দাঁতে লাগান। ৫-৭ মিনিট রেখে ভালোভাবে মুছে ফেলুন। সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করুন।
৪. নারিকেল তেল (Oil Pulling)
নারিকেল তেল দিয়ে 'অয়েল পুলিং' দাঁতের উপর জমে থাকা দাগ এবং ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সহায়ক। এটি মুখের স্বাস্থ্যও উন্নত করতে সাহায্য করে। এক চা চামচ নারিকেল তেল নিয়ে ১০-১৫ মিনিট মুখে চবাতে থাকুন। পরে ভালোভাবে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
৫. আলু বা গাজর
গাজর বা আলু চিবানোর মাধ্যমে দাঁতের উপর জমে থাকা খাবারের কণা এবং ময়লা পরিষ্কার হতে সাহায্য করে। গাজর বা আলু খাওয়ার সময় তাদের চিবানোর মাধ্যমে দাঁত পরিষ্কার করতে পারেন। এটি দাঁতের উপর জমে থাকা প্লাক পরিষ্কার করতে সহায়ক হবে।
৬. নুন (Salt)
নুন প্রাকৃতিক স্ক্রাবিং উপাদান হিসেবে কাজ করে, যা দাঁতের সাদা গহ্বর দূর করতে সাহায্য করে। এক চা চামচ নুন নিয়ে তা কিছুটা পানি দিয়ে মিশিয়ে দাঁত ব্রাশ করুন। এটি ২-৩ মিনিট করে দাঁতে ঘষুন এবং পরে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
৭. কলা (Banana Peel)
কলা খাওয়ার পর কলার খোসাটি দাঁতে ঘষে দিলে এটি দাঁতের দাগ দূর করতে সহায়ক হতে পারে। এতে থাকা পটাশিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ দাঁতের সুরক্ষা এবং সাদা হতে সাহায্য করে। কলার খোসা নিয়ে দাঁতের উপরে ঘষুন ২-৩ মিনিট। এরপর দাঁত পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৮. পানি
পানির মাধ্যমে দাঁতের উপর জমে থাকা খাবারের কণা এবং ব্যাকটেরিয়া ধুয়ে ফেলা যায়। খাওয়ার পর পানি পান করলে দাঁতের সাদা গহ্বরের পরিমাণ কমে যাবে। খাবার খাওয়ার পর ভালোভাবে পানি পান করুন। বিশেষ করে, প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার পর এটি দাঁত পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
৯. পুদিনা পাতা (Mint Leaves)
পুদিনা পাতায় থাকা মিন্ট এবং অন্যান্য উপাদান দাঁতের সাদা গহ্বর দূর করতে সহায়ক। এটি দাঁতের তাজাতা এবং সতেজতা বজায় রাখে। পুদিনা পাতা মুখে চিবিয়ে ব্যবহার করুন বা পুদিনা তেলের সাথে গরম পানি দিয়ে গার্গল করুন।
দাঁত সাদা করার ঔষধের নাম কি?
দাঁত সাদা করার জন্য বাজারে বিভিন্ন ধরনের পণ্য এবং ঔষধ পাওয়া যায়। এই পণ্যগুলো সাধারণত দাঁতের দাগ দূর করতে এবং দাঁত উজ্জ্বল রাখতে সহায়তা করে। তবে, এদের ব্যবহারের আগে ডেন্টিস্টের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কিছু সাধারণ দাঁত সাদা করার ঔষধ বা পণ্য নিচে উল্লেখ করা হলো:
১. কোলগেট হোয়াইট (Colgate Optic White)
কোলগেট হোয়াইট একটি জনপ্রিয় দাঁত সাদা করার পেস্ট, যা দাঁতের দাগ পরিষ্কার করতে এবং সাদা করতে সাহায্য করে। এতে থাকা হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড দাঁতের ভিতরের দাগ দূর করে।
২. অ্যাক্সিডেন্টাল (Sensodyne Pronamel Gentle Whitening)
এটি একটি বিশেষ দাঁত সাদা করার পেস্ট যা দাঁতের সংবেদনশীলতা কমাতে সাহায্য করে এবং দাঁতকে সাদা রাখে।
৩. অর্লি হোয়াইট (Oral-B 3D White)
অর্লি হোয়াইট পেস্ট দাগ দূর করতে সাহায্য করে এবং দাঁতের সাদা ভাব বজায় রাখে। এতে ব্যবহৃত উপাদানগুলো দাঁতের গহ্বরে জমে থাকা ময়লা এবং প্লাক সরাতে সহায়ক।
৪. প্যারডন্টক্স হোয়াইট (Parodontax Whitening)
প্যারডন্টক্স হোয়াইট একটি শক্তিশালী দাঁত পরিষ্কারের পেস্ট যা মাড়ির স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে এবং একই সঙ্গে দাঁতকে সাদা রাখে।
৫. ডিএনএ হোয়াইট (DNA Whitening Toothpaste)
DNA হোয়াইট একটি বিশেষ দাঁত সাদা করার পেস্ট যা দাঁতের উপরের দাগ পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং দাঁত সাদা করে।
৬. ডি'আফট হোয়াইট (D'Aftee Whitening Gel)
এটি একটি দাঁত সাদা করার জেল, যা দাঁতের দাগ দূর করতে এবং দাঁতকে আরও উজ্জ্বল ও সাদা করতে সাহায্য করে।
৭. হোয়াইটনিং স্ট্রিপস (Whitening Strips)
Crest 3D White Strips: Crest এর 3D White Whitening Strips জনপ্রিয় এবং কার্যকরী, যা দাঁত সাদা করতে সহায়ক। এই স্ট্রিপসগুলো দাঁতের উপর প্রয়োগ করে নির্দিষ্ট সময় পরে মুছে ফেলতে হয়।
৮. নেচারস গেট (Nature's Gate Whitening Toothpaste)
এটি একটি প্রাকৃতিক উপাদানভিত্তিক দাঁত সাদা করার পেস্ট, যা ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য উপাদান দিয়ে দাঁত পরিষ্কার এবং সাদা করতে সহায়তা করে।
৯. ভিটামিন সি পাউডার (Vitamin C Powder)
ভিটামিন সি পাউডারও দাঁত সাদা করার জন্য ব্যবহৃত হতে পারে, তবে এটি ব্যবহারের আগে আপনার ডেন্টিস্টের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
১০. লেসোন হোয়াইটিং পেস্ট (Leson Whitening Paste)
লেসোন হোয়াইটিং পেস্ট একটি উচ্চ মানের দাঁত সাদা করার পেস্ট যা দাঁতের দাগ দূর করে এবং দাঁতকে উজ্জ্বল ও সাদা রাখে।
নোট:
- এই ঔষধগুলো বা পণ্যগুলি ব্যবহার করার আগে, বিশেষ করে যদি আপনার দাঁতের সংবেদনশীলতা বা কোনো দাঁতের সমস্যা থাকে, তাহলে ডেন্টিস্টের পরামর্শ নেয়া গুরুত্বপূর্ণ।
- সঠিক ব্যবহারে ও নিয়মিত ব্যবহারে দাঁত সাদা করা সম্ভব, তবে অতিরিক্ত ব্যবহারে দাঁতের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
দাঁত পরিষ্কার করার মেশিন
দাঁত পরিষ্কার করার মেশিন: দারুণ ফলাফল পাওয়ার জন্য কার্যকর পণ্য
দাঁত পরিষ্কার করার জন্য মেশিন বা ডিভাইসগুলি ব্যবহার করলে দাঁত আরও ভালোভাবে পরিষ্কার হয় এবং মাড়ির স্বাস্থ্য উন্নত হতে সাহায্য করে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের দাঁত পরিষ্কার করার মেশিন পাওয়া যায়, যেগুলো ব্যবহার করে আপনি আপনার দাঁতকে আরও সাদা, মসৃণ এবং সুস্থ রাখতে পারেন। এখানে কিছু জনপ্রিয় দাঁত পরিষ্কার করার মেশিনের নাম এবং তাদের সুবিধা তুলে ধরা হলো:
১. ইলেকট্রিক টুথ ব্রাশ (Electric Toothbrush)
ইলেকট্রিক টুথ ব্রাশ সাধারণত সাধারণ টুথ ব্রাশের তুলনায় আরও কার্যকরী, কারণ এটি দাতের উপর কম্পন এবং রোটেশন সৃষ্টি করে যা দাঁতের গভীর দাগ ও ময়লা দূর করতে সহায়ক। এটি মাড়ির স্বাস্থ্য উন্নত করার পাশাপাশি দাঁতের জমে থাকা প্লাক দূর করতে সাহায্য করে।
- ব্যবহার: এটি সাধারণত একে সক্রিয় করতে বাটন প্রেস করলে কম্পন শুরু হয় এবং আপনি ধীরে ধীরে ব্রাশটি দাঁতে চালাতে থাকেন।
- উদাহরণ: Oral-B Pro, Philips Sonicare, Colgate Hum
২. ওয়াটার পিক (Water Pik)
ওয়াটার পিক বা ডেন্টাল ওয়াটার ফ্লসার দাঁতের মধ্যে জমে থাকা ময়লা এবং প্লাক দূর করতে সাহায্য করে। এটি দাঁতের ফাঁক এবং মাড়ির নিচে থাকা ময়লা পরিষ্কার করতে অত্যন্ত কার্যকর। এই মেশিনটি জল বা লবণ পানির মাধ্যমে দাঁতের ফাঁক পরিষ্কার করে।
- ব্যবহার: এটি একটি বাটি বা ট্যাঙ্ক থেকে জল শুষে নিয়ে একে বিশেষ নল দিয়ে মুখে ছিটিয়ে দেয়।
- উদাহরণ: Waterpik Aquarius, Panasonic Oral Irrigator
৩. ডেন্টাল স্ক্র্যাবার (Dental Scraper)
ডেন্টাল স্ক্র্যাবার এক ধরনের হালকা ভ্রমণযোগ্য যন্ত্র, যা দাঁতের প্লাক ও ক্যালকুলাস দূর করতে সাহায্য করে। এটি দাঁত পরিষ্কারের জন্য ব্যবহার করা হয়, বিশেষ করে দাঁতের উপর জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করতে।
- ব্যবহার: এটি ব্যবহারের জন্য টিপটি দাঁতের সংস্পর্শে রেখে ধীরে ধীরে স্ক্র্যাব করতে হয়।
- উদাহরণ: Pro Sonic, Cleanic, Smile Brilliant
৪. ওরাল কেয়ার গ্যাজেট (Oral Care Gadgets)
অনেক গ্যাজেটও দাঁত পরিষ্কারের জন্য ব্যবহৃত হয়, যেমন রোটারি টুথ ব্রাশ, সনিক ব্রাশ এবং বিভিন্ন ধরনের ব্রাশ হেড। এগুলি সাধারণত দাঁতের দাগ, ফাঁক এবং মাড়ির যত্ন নেয়ার জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা।
- ব্যবহার: রোটারি ব্রাশগুলি ছোট ছোট চক্রাকারে দাঁতে ঘোরানোর মাধ্যমে পরিষ্কার করে, আর সনিক ব্রাশগুলি উচ্চ গতিতে কম্পন সৃষ্টি করে।
- উদাহরণ: Philips Sonicare Diamond Clean, Oral-B Smart Series
৫. লেজার ডেন্টাল কেয়ার মেশিন (Laser Dental Care Machine)
লেজার ডেন্টাল কেয়ার মেশিনটি দাঁতের গভীরে প্রবাহিত হয়ে দাঁতের দাগ, প্লাক এবং ব্যাকটেরিয়া দূর করতে ব্যবহৃত হয়। এটি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে দাঁতকে সুরক্ষিত ও স্বাস্থ্যকর রাখে।
- ব্যবহার: এটি সাধারণত ডেন্টিস্টের অধীনে ব্যবহৃত হয়, কিন্তু কিছু পেশাদার গ্যাজেটও বাজারে পাওয়া যায় যা বাড়িতে ব্যবহার করা যায়।
৬. পোর্টেবল ডেন্টাল ফ্লসার (Portable Dental Flosser)
পোর্টেবল ডেন্টাল ফ্লসারটি ছোট এবং সহজে ব্যবহৃত এক ধরনের ডিভাইস, যা দাঁতের মাঝে খাবারের কণা এবং ময়লা বের করতে সাহায্য করে। এটি ওয়াটার পিক বা বায়োফ্লসারের মতো কাজ করে।
- ব্যবহার: মুখের ভিতরে পানি ছিটিয়ে বা শুষে দাঁতের ফাঁক থেকে ময়লা বের করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
- উদাহরণ: Panasonic, Waterpik Cordless
৭. সোনিক টুথ ব্রাশ (Sonic Toothbrush)
সোনিক টুথ ব্রাশ সাধারণত খুব দ্রুত কম্পন বা স্পন্দন তৈরি করে, যা দাঁত পরিষ্কার করতে খুব কার্যকরী। এটি দাঁতের উপর শক্তভাবে বসানো প্লাক সরাতে সাহায্য করে এবং সাদা দাঁত বজায় রাখে।
- ব্যবহার: সোনিক ব্রাশটি ব্যাটারি বা চার্জ দিয়ে ব্যবহার করা যায়, যা উচ্চ গতির কম্পনে দাঁত পরিষ্কার করে।
- উদাহরণ: Sonicare Protective Clean, Oral-B Genius X
দাঁত পরিষ্কার করার মেশিনগুলি দাঁত ও মাড়ির সুস্থতা বজায় রাখতে অত্যন্ত কার্যকরী। তবে, মেশিন ব্যবহার করার আগে এটি নিশ্চিত করুন যে আপনি সঠিকভাবে ব্যবহার করছেন এবং আপনার দাঁতের জন্য উপযুক্ত মেশিনটি নির্বাচন করেছেন। নিয়মিত ডেন্টিস্টের পরামর্শ নেওয়া এবং উপযুক্ত মেশিন ব্যবহারের মাধ্যমে দাঁত সাদা ও সুস্থ রাখতে সাহায্য করতে পারে।
দাঁত পাথর পরিষ্কার করার উপায়
দাঁতে পাথর বা ট্যার্টার (Tartar) জমে গেলে এটি মাড়ি ও দাঁতের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এবং সঠিকভাবে পরিষ্কার না করলে দাঁতের রোগ সৃষ্টি করতে পারে। দাঁতের পাথর দূর করার জন্য কিছু সাধারণ ও কার্যকর উপায় রয়েছে, যা আপনি বাড়িতে বা ডেন্টিস্টের কাছে করতে পারেন।
১. ডেন্টাল স্ক্র্যাবিং (Dental Scraping)
দাঁতের পাথর পরিষ্কার করার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হল ডেন্টাল স্ক্র্যাবিং। এটি একটি পেশাদার পদ্ধতি, যেখানে ডেন্টিস্ট একটি বিশেষ যন্ত্র ব্যবহার করে দাঁতের উপর জমে থাকা ট্যার্টার বা পাথর পরিষ্কার করেন। স্ক্র্যাবিং সাধারণত মাড়ির কাছে এবং দাঁতের নিচের অংশে জমে থাকা পাথর পরিষ্কার করতে সহায়ক।
- ব্যবহার: এই পদ্ধতিতে, ডেন্টিস্ট পাথর এবং প্লাক সরাতে স্ক্যালার বা কিউরেট ব্যবহার করেন।
- ফলাফল: দাঁতের পাথর দূর হয়ে যাওয়ার পরে দাঁত এবং মাড়ি আরও পরিষ্কার এবং সুস্থ থাকে।
২. ওয়াটার পিক (Water Pik) বা ডেন্টাল ওয়াটার ফ্লসার
ওয়াটার পিক বা ডেন্টাল ওয়াটার ফ্লসার হল এক ধরনের যন্ত্র যা জলের সাহায্যে দাঁতের ফাঁক ফাঁক পরিষ্কার করে এবং সেখানে জমে থাকা প্লাক বা পাথর বের করে। এটি দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা ময়লা এবং খাবারের কণা বের করে, যা দাঁতের পাথর তৈরি হতে বাধা দেয়।
- ব্যবহার: ওয়াটার পিক বা ফ্লসার মুখে রেখে পানি দিয়ে দাঁতের মধ্যে প্রবাহিত করে পরিষ্কার করতে হয়।
- ফলাফল: এটি দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করে, ফলে পাথরের সৃষ্টি কম হয়।
৩. ডেন্টাল ফ্লস (Dental Floss)
ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করেও দাঁতের পাথর পরিষ্কার করা যেতে পারে, যদিও এটি সরাসরি পাথর পরিষ্কার করতে সহায়তা নাও করতে পারে, তবে ফ্লসিং দাঁতের মধ্যে জমে থাকা খাবার এবং প্লাক দূর করতে সাহায্য করে, যা পরবর্তীতে পাথরের সৃষ্টি রোধ করে।
- ব্যবহার: ফ্লসিংয়ে একটি পাতলা ফিতা দাঁতের ফাঁকে চালিয়ে পাথরের সৃষ্টি রোধ করা হয়।
- ফলাফল: এটি দাঁতের ফাঁক থেকে খাবারের কণা বের করে দাঁত সুস্থ রাখে, ফলে পাথরের বৃদ্ধি কমে।
৪. বেকিং সোডা এবং লেবুর রস (Baking Soda and Lemon Juice)
বেকিং সোডা এবং লেবুর রসের মিশ্রণটি দাঁত পরিষ্কারের জন্য প্রাকৃতিক উপাদান হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এটি ট্যার্টার বা দাঁতের পাথরের উপর কাজ করে এবং দাঁত সাদা করতে সহায়তা করে।
- ব্যবহার: এক চামচ বেকিং সোডার সাথে এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন এবং এটি দাঁতে মৃদুভাবে লাগান। এক মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
- ফলাফল: এটি পাথর ও দাগ দূর করতে সহায়ক এবং দাঁতকে উজ্জ্বল করে।
৫. অর্লি-বে টুথপেস্ট (Oral-B Toothpaste for Tartar Control)
অনেক দাঁত পরিষ্কারের পেস্ট বাজারে পাওয়া যায় যা ট্যার্টার বা দাঁতের পাথর পরিষ্কারের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা। এই ধরনের পেস্ট দাঁতে জমে থাকা ময়লা এবং প্লাক দূর করতে সাহায্য করে।
- ব্যবহার: দাঁত ব্রাশ করতে এই ধরনের পেস্ট ব্যবহার করুন। এটি দাঁতের পাথর তৈরির প্রবণতা কমিয়ে দেয়।
- ফলাফল: নিয়মিত ব্যবহারে দাঁতের পাথর তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
৬. প্রোফেশনাল স্কেলিং (Professional Scaling)
প্রোফেশনাল স্কেলিং হল একটি পেশাদার পদ্ধতি, যেখানে ডেন্টিস্ট দাঁত পরিষ্কারের জন্য একটি স্কেলিং ডিভাইস ব্যবহার করে দাঁতের পাথর ও প্লাক সরিয়ে দেন। এটি দাঁতের জন্য সবচেয়ে কার্যকরী পদ্ধতি, যা পাথর জমে থাকার আগেই তা দূর করতে সাহায্য করে।
- ব্যবহার: ডেন্টিস্টের কাছে স্কেলিং করানো উচিত, এবং এটি প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ হিসেবে করা যেতে পারে।
- ফলাফল: দাঁতের পাথর দূর করার পাশাপাশি এটি দাঁত এবং মাড়ির স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
৭. প্রাকৃতিক উপাদান - নারিকেল তেল (Coconut Oil Pulling)
নারিকেল তেল দিয়ে ওয়্যারিং বা গার্গল করা একটি পুরনো প্রাকৃতিক পদ্ধতি যা দাঁত পরিষ্কারের জন্য ব্যবহৃত হয়। নারিকেল তেলের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ দাঁতের পাথর কমাতে সাহায্য করতে পারে।
- ব্যবহার: নারিকেল তেল মুখে রাখুন এবং ১৫-২০ মিনিটের জন্য তা মুখের মধ্যে ঘোরান। এরপর মুখ ধুয়ে ফেলুন।
- ফলাফল: এটি দাঁতের পাথর কমাতে এবং দাঁতের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
দাঁতের পাথর বা ট্যার্টার সরানোর জন্য নিয়মিত ডেন্টাল চেকআপ করা এবং সঠিক পদ্ধতিতে দাঁত পরিষ্কার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গৃহস্থালির উপকরণ দিয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে দাঁতের পাথর দূর করা সম্ভব, তবে পেশাদার পরিষ্কার করার জন্য ডেন্টিস্টের সাহায্য নেয়া সবচেয়ে কার্যকর।