শীতে ত্বকের যত্ন
নিচে শীতে ত্বকের যত্নের জন্য কয়েকটি কার্যকর পরামর্শ দেওয়া হলো:
সকালে ও রাতে ত্বক ভালো করে পরিষ্কার করুন। মাইল্ড ও ময়েশ্চারাইজিং ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন, যা ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। শুষ্ক ত্বক হলে ভারী ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য অয়েল-ফ্রি ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন। ত্বক ধোয়ার পরপরই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। ঠোঁট শুষ্ক হয়ে গেলে ফেটে যায়। লিপ বাম বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করুন।
শীতে ঠোঁট চাটার অভ্যাস পরিহার করুন। শীতে কম পানি খাওয়া হয়, যা ত্বক শুষ্ক করে ফেলে। দিনে অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করুন।ভেতর থেকে ত্বক হাইড্রেট রাখতে গরম চা বা স্যুপ খেতে পারেন। শীতের হালকা রোদও ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। তাই সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। SPF ৩০ বা তার বেশি যুক্ত সানস্ক্রিন বেছে নিন।
অতিরিক্ত গরম পানিতে গোসল করলে ত্বকের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট হয়ে যায়। হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন। সপ্তাহে ১-২ বার স্ক্রাব করুন মৃত কোষ দূর করার জন্য। মাইল্ড স্ক্রাবার ব্যবহার করুন যাতে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
মধু, দুধ, অ্যালোভেরা জেল, নারকেল তেল, বা অলিভ অয়েল ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। ত্বকে সরাসরি প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। শীতে ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ভিটামিন সি, ই, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার খান। ফল, সবজি, বাদাম, ও মাছ খাদ্যতালিকায় রাখুন। ঘুমানোর আগে ময়েশ্চারাইজার বা ত্বকের উপযোগী নাইট ক্রিম ব্যবহার করুন। হাত ও পায়ের জন্য পেট্রোলিয়াম জেলি বা ভারী ক্রিম ব্যবহার করুন।
শীতে ত্বক উজ্জ্বল করার ঘরোয়া উপায়?
শীতে ত্বক উজ্জ্বল রাখতে ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিছু সহজ ও কার্যকর উপায় অবলম্বন করতে পারেন। এগুলো প্রাকৃতিক এবং ত্বকের ক্ষতি ছাড়াই উজ্জ্বলতা আনবে। নিচে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি দেওয়া হলো:
১ চামচ কাঁচা দুধের সঙ্গে ১ চামচ মধু মিশিয়ে ত্বকে লাগান। ১৫-২০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ত্বক নরম ও উজ্জ্বল হবে। ত্বকে অ্যালোভেরা জেল সরাসরি লাগান। ২০ মিনিট রেখে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের শুষ্কতা কমায় এবং উজ্জ্বলতা বাড়ায়। ১টি টমেটো ব্লেন্ড করে তার রস বের করে ত্বকে লাগান।
শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। টমেটোর প্রাকৃতিক অ্যাসিড ত্বকের কালচে দাগ দূর করে উজ্জ্বলতা আনে। ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে ১ চামচ মধু মিশিয়ে ত্বকে লাগান। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। ত্বক টানটান ও উজ্জ্বল হয়।
১ চামচ চালের গুঁড়ার সঙ্গে ১ চামচ টক দই মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। ত্বকে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। ত্বক পরিষ্কার ও উজ্জ্বল করে। সমপরিমাণ নারকেল তেল ও লেবুর রস মিশিয়ে ত্বকে ম্যাসাজ করুন। ১০-১৫ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। শুষ্ক ত্বক ময়েশ্চারাইজ করে উজ্জ্বল করে। শসার রস বের করে ত্বকে লাগান। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।শসা ত্বক শীতল করে এবং উজ্জ্বলতা আনে।
২ চামচ বেসনের সঙ্গে এক চিমটি হলুদ ও ১ চামচ দই মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ হয়। দিনে ২-৩ বার মুখে গোলাপ জল স্প্রে করুন। ত্বক তরতাজা ও উজ্জ্বল দেখায়। শীতে পর্যাপ্ত পানি পান করুন। ভিটামিন সি (লেবু, কমলা), অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও স্বাস্থ্যকর চর্বি সমৃদ্ধ খাবার (বাদাম, মাছ) খান। ভেতর থেকে ত্বক উজ্জ্বল থাকবে।
শীতকালে মুখে কি ক্রিম মাখা উচিত?
শীতকালে ত্বকের শুষ্কতা কমাতে এবং আর্দ্রতা ধরে রাখতে সঠিক ক্রিম নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শীতে মুখে এমন ক্রিম ব্যবহার করা উচিত যা ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে এবং শুষ্কতা প্রতিরোধ করে।
নিচে শীতকালের জন্য উপযোগী ক্রিম এবং সেগুলো নির্বাচন করার কিছু টিপস দেওয়া হলো:
শীতে মুখে ব্যবহারের জন্য ক্রিমের ধরন
হাইড্রেটিং উপাদান যেমন হায়ালুরনিক অ্যাসিড, গ্লিসারিন, বা সেরামাইড যুক্ত ক্রিম বেছে নিন। এগুলো ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং শুষ্কতা দূর করে। ট্রোলিয়াম জেলি বা ভেসলিন সমৃদ্ধ ক্রিম শুষ্ক ত্বকের জন্য উপযোগী। এটি ত্বকে আর্দ্রতার স্তর তৈরি করে। প্রাকৃতিক তেলের ক্রিম ত্বকের জন্য ভালো কাজ করে।
নারকেল তেল, অলিভ অয়েল বা শিয়া বাটার যুক্ত ক্রিম ব্যবহার করুন। যদি আপনার ত্বকে বয়সের ছাপ বা বলিরেখার সমস্যা থাকে, তবে রেটিনল এবং ভিটামিন ই সমৃদ্ধ ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। শীতের রোদেও ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, তাই SPF ৩০ বা তার বেশি সানস্ক্রিনযুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
ত্বকের ধরন অনুযায়ী ক্রিমের পরামর্শ
ভারী ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম ব্যবহার করুন। শিয়া বাটার, কোকো বাটার, বা অ্যালোভেরা জেল সমৃদ্ধ ক্রিম ভালো। লাইটওয়েট বা অয়েল-ফ্রি ক্রিম ব্যবহার করুন। জেল বেসড ময়েশ্চারাইজার কার্যকর। পারফিউমমুক্ত এবং অ্যালকোহলমুক্ত ক্রিম ব্যবহার করুন। সোডিয়াম হায়ালুরোনেট বা অ্যালোভেরা যুক্ত ক্রিম বেছে নিন।
কিছু জনপ্রিয় শীতকালীন ক্রিম
শীতকালে ত্বকের শুষ্কতা দূর করার জন্য কিছু জনপ্রিয় এবং কার্যকর শীতকালীন ক্রিম নিচে উল্লেখ করা হলো। এগুলো বিভিন্ন ত্বকের ধরন অনুযায়ী ব্যবহার করা যেতে পারে:
১. নিভিয়া সফট ক্রিম (Nivea Soft Cream)
- উপকারিতা: হালকা, নন-গ্রিজি এবং ত্বকে দ্রুত শোষিত হয়।
- উপাদান: ভিটামিন ই এবং জোজোবা অয়েল।
- যে ত্বকের জন্য: শুষ্ক ও স্বাভাবিক ত্বকের জন্য উপযুক্ত।
২. পন্ডস কোল্ড ক্রিম (Pond's Cold Cream)
- উপকারিতা: ত্বকের শুষ্কতা দূর করে গভীর থেকে ময়েশ্চারাইজ করে।
- উপাদান: ভিটামিন ই এবং প্রাকৃতিক তেল।
- যে ত্বকের জন্য: শুষ্ক থেকে খুব শুষ্ক ত্বকের জন্য উপযুক্ত।
৩. সেটাফিল ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম (Cetaphil Moisturizing Cream)
- উপকারিতা: সংবেদনশীল এবং শুষ্ক ত্বকের জন্য ভালো কাজ করে।
- উপাদান: গ্লিসারিন, স্যামোলিয়েন্ট, এবং ময়েশ্চারাইজিং উপাদান।
- যে ত্বকের জন্য: শুষ্ক এবং সংবেদনশীল ত্বকের জন্য আদর্শ।
৪. গার্নিয়ার বডি কোকুন ক্রিম (Garnier Body Cocoon Cream)
- উপকারিতা: শুষ্ক ত্বকে দ্রুত আর্দ্রতা যোগায় এবং ত্বক নরম করে।
- উপাদান: পিচ ও অ্যাপ্রিকট অয়েল।
- যে ত্বকের জন্য: স্বাভাবিক ও শুষ্ক ত্বকের জন্য ভালো।
৫. হিমালয়া হারবালস ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম (Himalaya Herbals Nourishing Cream)
- উপকারিতা: প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে ত্বককে হাইড্রেট রাখে।
- উপাদান: অ্যালোভেরা, জোজোবা অয়েল এবং প্রাকৃতিক হার্ব।
- যে ত্বকের জন্য: স্বাভাবিক থেকে শুষ্ক ত্বকের জন্য।
৬. ল্যাকমে পিচ মিল্ক ময়েশ্চারাইজার (Lakme Peach Milk Moisturizer)
- উপকারিতা: হালকা এবং সারা দিন আর্দ্রতা ধরে রাখে।
- উপাদান: পিচ এসেন্স এবং ভিটামিন সি।
- যে ত্বকের জন্য: তৈলাক্ত ও স্বাভাবিক ত্বকের জন্য উপযুক্ত।
৭. বায়োডার্মা আটোডার্ম ক্রিম (Bioderma Atoderm Cream)
- উপকারিতা: শুষ্ক ত্বক গভীর থেকে ময়েশ্চারাইজ করে এবং ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ধরে রাখে।
- উপাদান: সেরামাইড এবং ফ্যাটি অ্যাসিড।
- যে ত্বকের জন্য: শুষ্ক ও সংবেদনশীল ত্বকের জন্য।
৮. ভেসলিন ইন্টেনসিভ কেয়ার ড্রাই স্কিন ক্রিম (Vaseline Intensive Care Cream)
- উপকারিতা: গভীর থেকে ময়েশ্চারাইজ করে এবং ত্বকের শুষ্কতা দূর করে।
- উপাদান: পেট্রোলিয়াম জেলি এবং প্রাকৃতিক তেল।
- যে ত্বকের জন্য: খুব শুষ্ক ত্বকের জন্য আদর্শ।
৯. প্লাম ইলুমিনেন্স ক্রিম (Plum E-Luminence Cream)
- উপকারিতা: ত্বক উজ্জ্বল এবং হাইড্রেট রাখে।
- উপাদান: ভিটামিন ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
- যে ত্বকের জন্য: শুষ্ক থেকে স্বাভাবিক ত্বকের জন্য।
১০. ডাভ ইনটেনসিভ ক্রিম (Dove Intensive Cream)
- উপকারিতা: ত্বককে নরম, মসৃণ এবং আর্দ্র রাখে।
- উপাদান: পুষ্টিকর তেল এবং ময়েশ্চারাইজিং এজেন্ট।
- যে ত্বকের জন্য: শুষ্ক ত্বকের জন্য কার্যকর।
ক্রিম ব্যবহারের সময় সঠিক পদ্ধতি
প্রথমে ফেসওয়াশ বা ক্লিনজার দিয়ে ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। হালকা গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিন, যা ত্বকের ছিদ্রগুলো খুলে দিতে সাহায্য করবে। তোয়ালে দিয়ে মুখ আলতোভাবে মুছে শুকিয়ে নিন।যদি টোনার ব্যবহার করেন, তাহলে এটি মুখ পরিষ্কারের পর ব্যবহার করুন।
এটি ত্বকের পিএইচ ব্যালেন্স ঠিক রাখতে এবং ত্বককে মসৃণ রাখতে সাহায্য করে। দুই আঙুলে এক চিমটি পরিমাণ ক্রিম নিন। খুব বেশি পরিমাণে ক্রিম না নিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করুন।
মুখের পাঁচটি জায়গায় (মাথার কপাল, দুই গাল, নাক এবং চিবুক) ক্রিমের ছোট ছোট বিন্দু রাখুন। আলতোভাবে আঙুলের সাহায্যে ক্রিম ম্যাসাজ করুন। ক্রিম মুখে গোলাকার (circular) গতিতে ম্যাসাজ করুন। নিচ থেকে উপরের দিকে (upward motion) ম্যাসাজ করুন, যা ত্বককে টানটান রাখতে সাহায্য করে।
চোখের চারপাশে ক্রিম লাগানোর সময় খুব হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন। ক্রিম পুরোপুরি ত্বকে শোষিত হতে ৫-১০ মিনিট সময় দিন। অতিরিক্ত ক্রিম থাকলে টিস্যু দিয়ে আলতোভাবে মুছে ফেলুন।
দিনের ক্রিম: সানস্ক্রিন বা SPF যুক্ত ক্রিম ব্যবহার করুন।
রাতের ক্রিম: নাইট ক্রিম বা ডিপ ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম ব্যবহার করুন।
শীতে ক্রিম ব্যবহারের অতিরিক্ত কিছু কার্যকর টিপস
গভীর ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম বা তেল-ভিত্তিক ক্রিম ব্যবহার করুন। তৈলাক্ত ত্বক: হালকা এবং নন-গ্রিজি ক্রিম, যেমন জেল বেসড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। সংবেদনশীল ত্বক: অ্যালার্জি-ফ্রি ও হারবাল উপাদানযুক্ত ক্রিম বেছে নিন। ময়লা বা তেল জমে থাকলে ক্রিম ত্বকে শোষিত হতে বাধা দিতে পারে।প্রতিদিন দু'বার ত্বক পরিষ্কার করুন। শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে পানির অভাব।
প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। ক্রিম লাগানোর আগে সিরাম ব্যবহার করুন, যা ত্বকের গভীরে কাজ করে। ক্রিম লাগানোর পর প্রয়োজনে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে ভুলবেন না। গরম পানিতে মুখ ধোয়া বা গোসল করলে ত্বকের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট হতে পারে। হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন।শুধু মুখ নয়, শীতকালে ঠোঁট ও হাতও শুষ্ক হয়ে যায়।
লিপ বাম এবং হ্যান্ড ক্রিম ব্যবহার করুন।রাতে গভীর ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম ব্যবহার করলে ত্বক সারারাত আর্দ্র থাকে। এটি ত্বকের পুনর্গঠনে সহায়তা করে। ত্বকের ময়েশ্চারাইজিং ক্ষমতা বাড়াতে অ্যালোভেরা জেল, নারকেল তেল, বা অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।
শীতকালে সূর্যের রশ্মি কম মনে হলেও UV রশ্মি ত্বকে ক্ষতি করতে পারে। SPF যুক্ত সানস্ক্রিন বা ডে ক্রিম ব্যবহার করুন। মৃত কোষ ত্বকে জমলে ক্রিম ভালোভাবে কাজ করে না। সপ্তাহে একবার হালকা স্ক্রাব ব্যবহার করুন।
সতর্কতা
- নতুন ক্রিম ব্যবহারের আগে হাতে বা কানের পেছনে পরীক্ষা করে দেখুন।
- যদি কোনো অস্বস্তি বা র্যাশ দেখা দেয়, ব্যবহার বন্ধ করুন।
শীতে নিয়মিত এই টিপসগুলো মেনে চললে আপনার ত্বক থাকবে নরম, মসৃণ, এবং উজ্জ্বল।